জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে শুক্রবার ভবানী ভবনে (সিআইডির দফতর) হাজিরা দিচ্ছেন না আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। হাজিরা না দেওয়ার কথা চিঠি মারফত জানিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র। পাশাপাশি, এই মামলায় তাঁকে কেন ডাকা হচ্ছে, এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর।
জিতেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, এই মামলা যে অঞ্চলের মধ্যে পড়ে, সেটি কখনই বিজেপি নেতার এলাকার মধ্যে ছিল না। জিতেন্দ্র বিধায়ক কিংবা মেয়র থাকা কালেও ওই অঞ্চল তাঁর অধীনে ছিল না। আদতে যে অঞ্চলের মামলা, সেটি রানিগঞ্জ এলাকার। ফলে সেখানকার রাজনৈতিক নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, প্রশাসনিক কর্তাদের না ডেকে কেন জিতেন্দ্রকে ডাকা হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। জিতেন্দ্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই সিআইডি তলব বলে মনে করছেন বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠরা।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্ডাল থানার পুরনো একটি মামলায় সাক্ষী হিসেবে তলব করা হয় জিতেন্দ্রকে। নোটিস প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন আসানসোলের ওই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে নোটিস দেওয়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কী বলব আমি? আমি আইন মেনে চলি। সাক্ষী হিসাবে যদি আমাদের কাছে জানতে চান, তা হলে নিশ্চয়ই আমরা জানিয়ে দেব।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০২০ সালের অন্ডাল থানার একটি মামলায় তাঁকে সাক্ষী হিসাবে নোটিস দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতেই কি তাঁকে তলব করা হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়রের অভিযোগ, ‘‘এটা এ রাজ্যের এক জন চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াও বলে দেবে। যেখানে সিবিআই ইতিমধ্যেই আদালতের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করছে, সেখানে হঠাৎ সিআইডির মনে হল আমাদেরও তদন্ত করা উচিত। আর বিজেপির সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের কাছেই সব তথ্য পাবে, তাদের সাক্ষী হিসাবে ডাকবে— সকলেই বুঝতে পারছেন কী হচ্ছে।’’
জিতেন্দ্রের পাল্টা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ‘‘বিগত কয়েক বছরে দেশের ৫৭০ জন বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সেটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়? ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের পর ইডির তল্লাশি হয়েছে, এটা প্রতিহিংসাপরায়ণতা নয়? অন্য দিকে লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতার নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁর কেশাগ্র স্পর্শ করা হচ্ছে না। সিআইডি তদন্তে সাজার হার সিবিআই-ইডির থেকে ভাল।’’ আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র ছাড়াও আসানসোল জেলা বিভাগীয় ইনচার্জ বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, আসানসোলের বিজেপি নেতা সুব্রত মিশ্র, বাঁকুড়া জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রকেও সিআইডির তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।