হাই কোর্টের অনুমতিক্রমে আসানসোলে ঢুকতে আর বাধা রইল না জিতেন্দ্র তিওয়ারির। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে নিজের শহরে ঢোকার অনুমতি পেলেন আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। কম্বলকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিজেপি নেতা। জামিন মেলার পর আদালতের নির্দেশ ছিল শহরে প্রবেশ করতে পারবেন না তিনি। অবশেষে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট জানাল, এ বার আসানসোলে প্রবেশ করতে পারবেন জিতেন্দ্র। আসানসোলে ঢুকতে ও থাকতে আর বাধা রইল না প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারির।
গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলের রামকৃষ্ণ ডাঙালে শিবচর্চা এবং কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জিতেন্দ্রর স্ত্রী, আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি। ওই অনুষ্ঠানে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর কম্বল বিতরণে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাতে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। ঝালি বাউরি নামে মৃত এক মহিলার পরিবারের সদস্যর অভিযোগের ভিত্তিতে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ একটি মামলা রুজু করে। ওই মামলায় আট জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর পর ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জিতেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়েছিল পুলিশ। পরে গত ১৮ মার্চ দিল্লির কাছে নয়ডায় যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে। টানা এক মাস প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে থাকার পর হাই কোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান জিতেন্দ্র। সেই জামিনের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল, যে আদালতে কম্বলকাণ্ড মামলা চলছে, সেখানে শুনানির দিন হাজিরা দিতেই হবে জিতেন্দ্রকে। তা ছাড়া, আসানসোল পুর এলাকায় জিতেন্দ্র ঢুকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেয় আদালত।
মাঝখানে পঞ্চায়েত ভোটে দুর্গাপুরে প্রচারে এসেছিলেন জিতেন্দ্র। কিন্তু আসানসোল আর যাননি বিজেপি নেতা। প্রায় ছ’মাস তিনি নিজের শহরের বাইরে ছিলেন। এ বার সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল হাই কোর্টের নির্দেশে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এই নির্দেশ দেন মঙ্গলবার।
এ নিয়ে জিতেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘চোর, ডাকাত, খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তাদের কোনও বিধিনিষেধ থাকে না। আমি আসানসোলকে ভালবাসি। তাই তৃণমূলের দয়ায় শহরে ঢুকতে পারছিলাম না। আদালতের উপর আস্থা ছিল। ভরসা ছিল। এই রায়দানে আমি খুবই খুশি।’’