চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ দু’য়েক পরেই উপপ্রধানের বিয়ে। তাই কাজ চলাকালীন পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে আয়োজন হল ‘আইবুড়ো ভাতে’র! মোবাইলে বেজে উঠল সানাই, শঙ্খ-ধ্বনি। মহিলা-সদস্যেরা উলুধ্বনি দিলেন। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ১ পঞ্চায়েতে অফিসে এমনই কাণ্ড ঘটেছে বলে সামাজিক-মাধ্যমে ভিডিয়ো ও ছবি ছড়িয়ে পড়ায় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
কাজের সময় প্রথা পালন নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করেছেন। যাঁকে ঘিরে এই আয়োজন, উপপ্রধান সাহাবুদ্দিন মণ্ডলের দাবি, “প্রধান-সহ কয়েকজন সদস্য বাড়ি থেকে খাবার তৈরি করে এনেছিলেন। সামনেই আমার বিয়ে। সে কারণে তাঁরা নিজের হাতের রান্না খাওয়ালেন। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।’’ বিডিও (জামালপুর) শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “এমন কিছু ঘটে থাকলে, ঠিক হয়নি। সত্যিই এমনটা ঘটলে, কেন এমন করা হল, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিভিন্ন কাজ নিয়ে আসা অনেকেই অফিসের ভিতর ‘উৎসবের মেজাজ’ দেখে, বেশি ক্ষণ অপেক্ষায় না থেকে ফিরে যান। যদিও পঞ্চায়েতের প্রধান ডলি নন্দীর দাবি, “অফিসের সময় নষ্ট করে কিছু করা হয়নি। কাজ নিয়ে আসা কেউ ফেরতও যাননি। সবটাই রটনা।’’
সূত্রের খবর, শুক্রবার ওই পঞ্চায়েতের সাধারণ সভার পরে, বছর তিরিশের উপপ্রধানকে ‘আইবুড়ো ভাত’ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। জানা গিয়েছে, ৫ জুলাই উপপ্রধানের বিয়ে। তাঁর পছন্দের খাবার নিয়ে এসেছিলেন প্রধান-সহ কয়েকজন সদস্য। কাঁসার থালা-বাটিতে উপপ্রধানকে খেতে দেওয়া হয়— ভাত, ডাল, তরকারি, বড় মাছের মাথা, মুরগির মাংস, চাটনি, পায়েস, দই, মিষ্টি। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য চন্দনা পান, সৈয়দ মল্লিক, রূপালি বিশ্বাস ও জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মণিরা বেগম এবং পঞ্চায়েতের আধিকারিক অরুণ মালিক ও জয়ন্ত ভট্টাচার্যেরা।
জানা গিয়েছে, উপপ্রধানের কপালে দইয়ের ফোঁটা দেওয়া হয়। মোবাইলে বেজে ওঠে সানাইয়ের সুর। সদস্যেরা একে একে উপপ্রধানকে পায়েস, মাছের মাথা খাওয়ান।
বিজেপির জেলা মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় নন্দীর দাবি, “কর্ম-সংস্কৃতি শিকেয় তুলে পঞ্চায়েত দফতরে ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান! এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।’’ প্রধানের দাবি, “অফিসের কাজকর্ম বন্ধ রেখে কিছুই করা হয়নি। পঞ্চায়েতের সাধারণ সভা শেষ হওয়ার পরে, খাওয়ানো হয়েছে।’’