আপেল বিলি করছেন দেবু টুডু। নিজস্ব চিত্র
পেঁয়াজের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে পথচারীদের দেওয়া হল আপেল! মঙ্গলবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেট চত্বর। ‘জয় হিন্দ বাহিনী’র নেতৃত্বে এমনই অভিনব বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে।
বেলা ১১টা। ওই সংগঠনের জনা কুড়ি সদস্য পেঁয়াজের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে বুকে প্ল্যাকার্ড বেঁধে সরব হলেন। সেখানে খানিক বাদেই হাজির হলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর দেবু টুডু। নেতার সঙ্গে আসেন আরও বেশ কয়েকজন। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল।
চমকের শুরু দ্বিতীয় পর্বে। পথচারীদের কেউ অফিসে, কেউ বা ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন। তেমনই কয়েকজনকে দাঁড় করালেন ‘প্রতিবাদীরা’। পেটি থেকে দু’-চারটি আপেল বার করে কাগজের ঠোঙায় ভরে তা পথচারীদের দেওয়া শুরু হল। সঙ্গে দেবুবাবুরা বললেন, ‘‘পেঁয়াজের যা দাম। তাই এখন থেকে পেঁয়াজের বদলে আপেল খান।’’
তবে আপেল হাতে পেয়ে খানিক চমকেই গিয়েছিলেন প্রশাসনিক চত্বরে কাজে আসা নান্টু মালিক, এ পথ দিয়ে রোজ যাতায়াত করা প্রতীক বন্দ্যোপাধায়, লাবনি সেনেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘আপেল পেলাম ভাল কথা। তবে এক প্যাকেট পেঁয়াজ হলে হেঁশেলের চিন্তা একবেলার জন্য হলেও যেত।’’ আপেল বিলি করা হয় ট্র্যাফিক পুলিশদেরও।
কিন্তু কেন এমন প্রতিবাদ? সম্প্রতি দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংসদে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি পেঁয়াজ তেমন খান না। কারণ, তাঁর পরিবারে এই আনাজের তেমন চল নেই। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমও। এ দিন অর্থমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের সূত্রেই দেববাবুও বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী পেঁয়াজ খান না। কিন্তু পেঁয়াজ ছাড়া, আমাদের হাঁড়ি চড়ে না। এটা প্রতীকী প্রতিবাদ।’’
‘প্রতিবাদ’ সফল করতে এক হাজার আপেল বিলি করা হয়েছে বলে জানান সংগঠনটির জেলা সভাপতি রবীন নন্দী। সেই সঙ্গে তিনি পেঁয়াজ ও আপেলের বাজারদরটিও জানাতে ভোলেননি। পেঁয়াজ, ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। উল্টো দিকে, আপেল ৭০ টাকা কেজি দরে মিলছে বর্ধমানের বাজারে।
বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্দীপ নন্দীর বক্তব্য, ‘‘পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তৃণমূল নেতাদের এ সব কর্মসূচি আসলে রাজনৈতিক চমক দেওয়ার চেষ্টা।’’