পড়ে এই জমি। নিজস্ব চিত্র
পরিকল্পনা ছিল শিল্পতালুক গড়ার। তার জন্য কেনা হয়েছিল প্রায় ২৫ বিঘা জমি। কিন্তু তিন দশক কেটে গেলেও কালনা ২ ব্লকের সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের বন্দেবাজ এলাকায় গড়ে ওঠেনি শিল্পতালুক। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, দেখভালের অভাবে ওই জমি দখল হতে বসেছে।
১৯৯০ সালে পাকা রাস্তার পাশে শিল্পতালুকের জন্য জমি কেনে জেলা পরিষদ। জমির সীমানাও নির্ধারণ করে পাঁচিল দেওয়া হয়। ঠিক ছিল, ওই জমিতে বিদ্যুৎ, জল, পাকা রাস্তা-সহ নানা পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। তার পরে ধাপে ধাপে সেখানে গড়া হবে ছোট, বড় শিল্প। ফলে কর্মসংস্থান হবে বহু মানুষের। কিন্তু কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুরুতে আশার আলো ছিল। শিল্পতালুকের জমিতে তৈরি হয় প্লাইউড এবং প্লাস্টিকের একটি করে কারখানা। শুরু হয় একটি আটাকলও। বর্তমানে টিঁকে আছে শুধু প্লাস্টিকের কারখানাটি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, শুরুর বছর পাঁচেকের মধ্যে বন্ধ হয়ে প্লাইউডের কারখানা। পরে বহু বার প্রশাসনিক কর্তা এবং জনপ্রতিনিধিরা জমি পরিদর্শন করে গিয়েছন। কিন্তু কিছুই হয়নি।
বন্দেবাজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্লাইউড কারখানার কিছু ভাঙাচোরা অংশ এখনও পড়ে রয়েছে। শিল্পতালুক তৈরির সীমানা পাঁচিলের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গিয়েছে। তবে বেশির ভাগ জমিই ফাঁকা। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে বনজঙ্গল। জমির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে গরু, ছাগলের দল। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘদিন পড়ে থাকার জন্য জমির বেশ কিছু অংশ দখল হয়ে গিয়েছে। ফাঁকা জমির বিভিন্ন অংশে রাতে চলে দুষ্কর্মও। কেউ কেউ আবার পড়ে থাকা জমিতে বিভিন্ন আনাজের চাষও করেন। এমনই এক জন ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, ‘‘অনেক আশা ছিল এলাকায় শিল্প গড়ে উঠবে। তা আর হল না। ফাঁকা জমি পড়ে রয়েছে বলে কিছু ফসলের চাষ করি।’’ তিনি জানান, পাটকাঠি দিয়ে প্লাইউড তৈরি হত। ভাল পরিকাঠামো নিয়ে তৈরি হয়েছিল কারখানাটি। কিন্তু পাঁচ বছরেই ঝাঁপ পড়ে গেল। আটাকলটিও বেশি দিন স্থায়ী হয় নি।
সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান জগবন্ধু মণ্ডলের কথায়, ‘‘শিল্প হলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আশা করছি ভবিষ্যতে ভাল কিছু হবে।’’ জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, ‘‘ওই জমি আমরা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের হাতে তুলে দিয়েছি। জমি নিয়ে ওই দফতরের কী ভাবনা রয়েছে, খোঁজখবর করা হচ্ছে।’’