এই ভবন ঘিরেই অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
কোনও দরপত্র না ডেকেই পড়ে থাকা ভবন ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রানিগঞ্জের এগারা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
১৯৮৩-র পরে এগারার সাহেবগঞ্জ এলাকায় ওই ভবনে পঞ্চায়েত অফিসটি ছিল। বছর দু’য়েক আগে মেজিয়া সেতুর কাছে নতুন ভবন তৈরি হওয়ায় অফিস সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়। এই পরিস্থিতিতে বিতর্ক বেধেছে সাহেবগঞ্জের ওই পুরনো ভবনটি নিয়ে। সেটি ২০১৮-য় এক ব্যবসায়ীকে কোনও নীতি না মেনে ভাড়া দেয় পঞ্চায়েত, অভিযোগ বিরোধীদের। সেখানে ওই ব্যবসায়ী একটি ছাপাখানা চালাচ্ছেন।।
এই বিষয়টি নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা সিপিএম নেতা আজাদি প্রসাদের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত নিজস্ব আয় বাড়াতে অধীনস্থ কোনও ভবন ভাড়া দিতেই পারে। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দরপত্র না ডেকে ঘুরপথে এই কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিডিও-র কাছে তদন্তের দাবি জানানো হবে।’’ বিজেপির আসানসোল দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি সন্দীপ গোপেরও অভিযোগ, ‘‘স্বজনপোষণ হয়েছে। ‘কাটমানি’ নেওয়া হয়েছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা উচিত।’’ বিরোধীদের দাবি, যে ব্যবসায়ীকে এই ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তিনি এলাকায় ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত।
কিন্তু কী ভাবে এই ভাড়া দেওয়া হয়েছে, এই প্রশ্নেই ভিন্ন প্রতিক্রিয়া মিলেছে তৃণমূলের অন্দরেই। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা দাস বলেন, “আমি প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই পূর্বতন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ দরপত্র না ডেকে এই ভাড়া দিয়েছেন। সে জন্য একটি চুক্তিপত্রও রয়েছে। তা মেনে ওই ব্যবসায়ী ভাড়া দেন।’’ যদিও আগের পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা অশোক হেলা দাবি করেছেন, ভাড়া দেওয়ার কথা জানিয়ে তাঁরা পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিসে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা প্রথমে ভাড়া নেন। কিন্তু তিনি বেশি তা চালাতে না পেরে ভবন ফেরত দেন পঞ্চায়েতকে। তার পরে ওই ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেওয়া হয়। অশোকবাবুর দাবি, ‘‘শর্ত অনুযায়ী, পঞ্চায়েত চাইলেই ওই ব্যবসায়ীকে উঠিয়ে দিতে পারে। কেউই তাতে বাধা দেবে না। এতে কোনও দুর্নীতিরও জায়গা নেই।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজখবর করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’