এই লিফলেট দিয়েই বাজিমাত করতে চায় সিপিএম। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ময়দানে জিততে ক্রিকেট মাঠকে অস্ত্র করল সিপিএম। কমবয়েসীদের নজর কাড়তে পুরভোটে আইপিএলের সূচিকেই প্রচারের হাতিয়ার করল তারা। দোসর বাংলা নতুন বছরের ক্যালেন্ডারও। কালনা শহরের সিপিএম নেতাদের দাবি, সুন্দর ভাঁজের এই লিফলেট যত সহজে ভোটারদের পকেটে ঢুকবে, ততই মনে থেকে প্রার্থীর নামটাও।
এতদিন দেওয়াল লিখন, পোস্টার, ফ্লেক্স, ব্যানার এবং ছোটখাটো সভা ছিল সিপিএমের প্রচারের মাধ্যম। কিন্তু এ বার শুরু থেকেই অন্য ধরনের কিছু করার কথা ভাবেন নেতারা। একাধিক বৈঠক, আলোচনার পরে যুব নেতৃত্বের মত নিয়ে আইপিএলই বাজি শেষপর্যন্ত বাজি হয়ে ওঠে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের আবহাওয়ার মধ্যে আইপিএল পড়ে যাওয়ায় সেটাকেই তুরুপের তাস করেন নেতারা। সন্ধ্যা নামতেই ঘরে ঘরে ক্রিকেটের উন্মাদনাকে কাজে লাগিয়ে ভোটে জেতার কথা ভাবেন তারা। সঙ্গে ঢুকে যায় আর কয়েকদিন পরের নববর্ষের ক্যালেন্ডারও।
লাল রঙের মোটা কাগজের লম্বাটে লিফলেট ছাপানো হয়। যার এক দিকে রয়েছে আইপিএলের সূিচ ও নববর্ষের ক্যালেন্ডার। গুরুত্বপূর্ণ কিছু খেলাকে আলাদা রঙে চিহ্নিতও করে দেওয়া হয়েছে। আরেক দিকে রয়েছে সিপিএম প্রার্থীর নাম, প্রতীক, ও বিদায়ী তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের খামতিগুলি। ক্ষমতায় আসার আগে জোট যে ৬টি প্রধান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেগুলি লিখে তাদের ‘ভাঁওতা’ বলে দাবি করা হয়েছে সেখানে। এর সঙ্গে জণগনই যে আসল শক্তির মালিক বলা হয়েছে তা-ও।
দলীয় সূত্রে খবর, শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নামে হাজার পাঁচেক লিফলেট ছাপানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে লিফলেটগুলি বিলিও শুরু করা হয়ে গিয়েছে। এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে। বিশেষ করে গতানুগতিক প্রচারে কিছুটা হলেও একঘেয়েমি এসে গিয়েছে। যুব সমাজকে টানতে নতুন উদ্যোগ প্রয়োজন। তাই এই ভাবনা।’’ ওই নেতার দাবি, আইপিএল এবং বাংলা ক্যালেন্ডারের টানে অনেকে লিফলেট চেয়েও নিচ্ছেন। কেউ কেউ তা তিন ভাঁজ করে পকেটেও রেখে দিচ্ছেন। সিপিএমের কালনা লোকাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘নতুন ধরনের প্রচারে ভালই সাড়া মিলেছে। পুরভোটে কালনা শহরে অন্য রকমের প্রচারের আরও কিছু পরিকল্পনাও রয়েছে আমাদের।’’
তবে সিপিএমের অভিনব প্রচারকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল, বিজেপি। কালনা শহরের তৃণমূল নেতা গোরা পাঠক বলেন, ‘‘১৮টি ওয়ার্ডে প্রচারে আমাদের দলই এগিয়ে। সিপিএমকে মানুষ অনেক দেখেছেন। আর কিছুতেই ওদের বিশ্বাস করবেন না মানুষ।’’ বর্ধমান পূর্ব এলাকার বিজেপির জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিকেরও দাবি, আসল কাজ তার দলই করছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় কর্মীরা মানুষকে বোঝাচ্ছেন কেন তাদের ভোট দেবেন।