আলো আসার আনন্দে। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে বসবাস। অথচ, বিদ্যুতের সংযোগ আসেনি। পাশেই আলোয় ঝকঝকে বিধাননগরের দিকে তাকিয়ে রাতে হা-হুতাশ করা ছাড়া উপায় ছিল না দুর্গাপুরের ডিপিএল সাব স্টেশন বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের। অবশেষে রবিবার তাঁদের ঘরে আলো জ্বলল। কেন্দ্রীয় ‘ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিম’-এর আওতায় এই বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বস্তির কাছেই ডিপিএলের সাব স্টেশন। প্রায় আড়াইশো মানুষের বাস এই বস্তিতে। কেউ রাজমিস্ত্রি, টালি মিস্ত্রি, কেউবা দিনমজুর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলেই বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন বহু বার। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এ ভাবেই পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ দশক। শেষ পর্যন্ত তাঁদের ঘরে আলো আসায় খুশি পূজা প্রসাদ, আইটিআই পড়ুয়া বিধানচন্দ্র মাহাতোরা। পূজার কথায়, ‘‘আমার বয়স এখন ২৫ বছর। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে। সাধারণত মোমবাতি জ্বেলে পড়েছি আমরা। এই প্রজন্মকে আলোর সমস্যার মধ্যে থাকতে হবে না, এই ভেবে খুব ভাল লাগছে।’’ বিধান বলেন, ‘‘ছোট থেকেই আমরা হ্যারিকেন, লন্ঠনের আলোয় পড়াশোনা করেছি। আমরা বহু জায়গায় আমাদের সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু ফল হয়নি। এতদিনে সমস্যা মিটল।’’
বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে শুধু মিটারের খরচ দিয়েই বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায়। বিদ্যুতের খুঁটি, তার, ট্রান্সফর্মার সব প্রকল্প থেকে করা হয়। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকেরা প্রকল্প রূপায়নে সহযোগিতা করেছেন।’’
কেন এতদিন বিদ্যুৎ আসেনি এই বস্তিতে? ডিপিএলের এক আধিকারিক জানান, ওই বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য দরবার করা হয়। অনুমোদন ও অর্থ পাওয়ার পরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।