প্রতীকী ছবি।
দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের জোয়ালডাঙা গ্রামের ঘটনা। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের মতে, দু’টি গোষ্ঠী দলেরই দুই নেতার অনুগামী হিসেবে পরিচিত। তবে তৃণমূলের কোনও নেতাই কোন্দলের অভিযোগ স্বীকার করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশের মতে, জোয়ালভাঙায় থাকা দু’টি গোষ্ঠী দলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও এলাকার বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির অনুগামী হিসেবে পরিচিত। দু’টি গোষ্ঠীরই দু’টি আলাদা দলীয় কার্যালয়ও রয়েছে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আচমকা দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি বাধে। গ্রেফতার হওয়ার আগে দলের অন্দরে নরেন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রদীপ মণ্ডল জানান, বিধায়ক অনুগামী অসীম মণ্ডলের নেতৃত্বে কয়েকজন তাঁদের দলীয় কার্যালয় দখলের চেষ্টা করেন। এলাকাবাসীর একাংশের বাধায় তাঁরা প্রাথমিক ভাবে সরে গেলেও অসীমবাবুর নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়েছিল বিরুদ্ধ গোষ্ঠী, অভিযোগ প্রদীপবাবুর। অসীমবাবু তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাশাপাশি, দলের অন্দরে জিতেন্দ্রবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত কাঙাল বাউড়ির অভিযোগ, ‘‘প্রদীপবাবু-সহ প্রায় কুড়ি জন মিলে আমাকে মারধর করেছেন। পাণ্ডবেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
দু’পক্ষের অভিযোগের পরে, পুলিশি-গ্রেফতারি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রদীপবাবুরা। প্রদীপবাবুর এক নিকটাত্মীয়ের অভিযোগ, তিনি পাণ্ডবেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও, অসীমবাবুদের না ধরে প্রদীপবাবু-সহ ছ’জনকে ধরেছে পুলিশ। নরেন্দ্রনাথবাবু কারও নাম না করে অভিযোগ করেছেন, “প্রভাবশালীদের কথায় পুলিশ একতরফা ভাবে দলীয় কর্মীদের গ্রেফতার করল। এতে দলেরই ক্ষতি হবে।’’ জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘গোষ্ঠী কোন্দলের কথা জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।”
ঘটনাচক্রে, গত বিধানসভা ভোটের আগে-পরে দু’পক্ষের ‘কলহ’ প্রকাশ্যে আসে বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, হরিপুরে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরিয়ার ডিও-র কয়লা উত্তোলনে কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইসিএল-এর পাণ্ডবেশ্বর ও শোনপুর বাজারি প্রকল্প এলাকায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক মারামারি হয়। বুধবার রাতের ঘটনাও আদতে শোনপুর বাজারিতে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করেই ঘটেছে বলে দাবি।
এ দিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। তদন্তকারীরা জানান, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু হয়েছে। তদন্ত চলছে। ধৃত ছ’জনকে দুর্গাপুর আদালতে পাঠানো হলে তাঁদের সাত দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।