ডিপিএল বাঁচবে, আশায় দুর্গাপুর

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে খানিকটা হলেও আশার আলো দেখছেন কর্মীরা। তবে আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত কোনও কাজই তেমন হয়নি।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

পুনর্গঠন না হলে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডকে (ডিপিএল) বাঁচানো যাবে না, বৃহস্পতিবার জামুড়িয়ায় এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরে শহরের শ্রমিক সংগঠনগুলির আশা, এ বার হয়তো ধুঁকতে থাকা ডিপিএল-কে বাঁচানোর কাজে তোড়জোড় করবে সরকার। কারণ, ডিপিএল-কে অন্য সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা কার্যকরী করার উদ্যোগ সে ভাবে এখনও নজরে আসেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

এ দিন জামুড়িয়ার শ্রীপুর এরিয়া স্টেডিয়ামে প্রকল্প উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ডিপিএল-র পুনর্গঠন হবে। না হলে ডিপিএল-কে বাঁচানো যাবে না।’’ পরে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী একই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘ডিপিএল-কে অন্য ভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ডিপিএল-এর জমি কাজে লাগাতে হবে। বছর বছর ডিপিএল-কে এত ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। সেই টাকায় সরকার অন্য শিল্প গড়বে। ডিপিএলকে অন্য সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব কার্যকরী করা হবে।’’ এই প্রস্তাব কার্যকরী হলে ডিপিএল যেমন বাঁচবে, তেমনই কেউ চাকরি হারাবেন না, মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি মন্ত্রী মলয় ঘটককে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিপিএল বাঁচাতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগ নতুন নয়। ২০১৭-র নভেম্বরে মালিকানা বদলে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে সংস্থার একশো শতাংশ মালিকানা যাওয়ার কথা জানান রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ডিপিএল সূত্রে খবর, গ্রাহক পরিষেবার জন্য ডিপিএল-এর বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থার দায় যাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হাতে। সংবহন ব্যবস্থাটি নেবে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা। তবে ডিপিএল-এর যাবতীয় স্থায়ী সম্পদ, মানবসম্পদ-সহ ৯৫% আর্থিক দায়ই থাকবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের উপরে। এ বিষয়ে প্রাথমিক তোড়জোড়ের পরে দুর্গাপুরে এসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলেছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। শ্রমিক নেতৃত্ব জানান, কারখানার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন দফতরের সমীক্ষার কাজই এখনও শেষ করা যায়নি। নিগমের আধিকারিকেরা ডিপিএলে এসে কাজকর্ম তদারকি করতে শুরু করেছেন। তবে কর্মীদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তাঁদের ‘ট্রান্সফার’ করা হবে কি না, হলে তা কী ভাবে ও কোথায় হবে, স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের রূপরেখা কী হবে, এ সমস্ত বিষয়ে তাঁরা অন্ধকারে বলে জানান শ্রমিক নেতারা।

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে খানিকটা হলেও আশার আলো দেখছেন কর্মীরা। তবে আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত কোনও কাজই তেমন হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জমি ব্যবহারের কথা বলেছেন। এতে ডিপিএল-এর ঘরে কিছু অর্থ আসবে। এই প্রস্তাব আমরা বহু আগেই সরকারের কাছে দিয়েছিলাম। তবে কোকআভেন প্ল্যান্ট নতুন করে চালু করা না গেলে ডিপিএল বাঁচানো যাবে না।’’, সিটু নেতা নরেন শিকদারের বক্তব্য, ‘‘শুধু পাওয়ার প্ল্যান্টকে বাঁচিয়ে ডিপিএলের হাল ফিরবে না। কোকআভেন প্ল্যান্টও চালু করতে হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement