ফোর-জি নেটওয়ার্ক এত দিনে!

শিল্পাঞ্চলে এই নেটওয়ার্কের টেলি-পরিষেবা ভাল নয় বলে অতীতে বার বার অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বার টাওয়ারের ক্ষমতা বাড়ানো ও নতুন টাওয়ার বসিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুরে টেলি-পরিষেবার মানোন্নয়ন ঘটনোর পরিকল্পনা নিয়েছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:৪১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

শিল্পাঞ্চলে এই নেটওয়ার্কের টেলি-পরিষেবা ভাল নয় বলে অতীতে বার বার অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বার টাওয়ারের ক্ষমতা বাড়ানো ও নতুন টাওয়ার বসিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুরে টেলি-পরিষেবার মানোন্নয়ন ঘটনোর পরিকল্পনা নিয়েছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, নতুন এই পদক্ষেপের ফলে গ্রাহকেরা আরও ভাল ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবা পাবেন। উন্নত হবে ইন্টারনেট পরিষেবাও।

Advertisement

বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ জানান, পশ্চিম বর্ধমান তৈরির পরে এই দুই শহরে ল্যান্ডলাইনের চাহিদা বেড়েছে। নতুন সরকারি দফতর, সরকারি আধিকারিকদের বাড়ি, নাগরিকদের বাড়়িতেও এই চাহিদা আগের তুলনায় খানিকটা বেড়েছে। কিন্তু বর্তমানে সংস্থার যা পরিকাঠামো রয়েছে, তা দিয়ে সেই চাহিদা মেটানো সম্ভব নয় বলে জানা গিয়েছে।

সম্প্রতি রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন, কুলটি, বরাকর ও নিয়ামতপুরের বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় এই সংস্থার নেটওয়ার্ক থাকে না। এই অভিযোগে বহু গ্রাহকই বিএসএনএল সংযোগ ছেড়েও দিয়েছেন। গ্রাহকদের এই অভিযোগ মেনে সংস্থার কর্তারা জানান, শুধু ওই এলাকাগুলিতেই নয়া উন্নত পরিষেবা দিতে না দিতে পারার জন্যই গত কয়েক বছরে প্রায় ৩৮ হাজার গ্রাহক তাঁদের সংযোগ ছেড়েছেন। যদিও বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক-সহ শহর লাগোয়া বিস্তীর্ণ অঞ্চলের রাস্তা সম্প্রসারণ ও জলের পাইপলাইন বসানোর জন্য রাস্তার দু’পাশ খোঁড়া হয়েছে। তার জেরে টেলিফোন কেবল কেটে গিয়েছে। ফলে পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। এই দু’টি বিষয়েই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে খবর বিএসএনএল সূত্রের খবর। সংস্থার আসানসোল টেলিকম জেলার জিএম পিকে মহাপাত্র জানান, দ্রুত সমস্যা মেটানো হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবস্থা আরও উন্নততর করা হচ্ছে। ফলে এখন যে সব এলাকার বাসিন্দারা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ, তাঁরা মাস চারেকের মধ্যে পরিষেবা পাবেন বলে আশা বিএসএনএল কর্তাদের।

Advertisement

বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ জানান, আসানসোল ও দুর্গাপুরে আরও প্রায় ৪২টি ফোর-জি ক্ষমতার বিটিএস (‌বেস ট্র্যান্সসিভার স্টেশন) টাওয়ার বসানো হচ্ছে। এর জন্য জায়গাও চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত এই দুই শহরে ফোর-জি ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে পারেনি বিএসএনএল। এ বার সেই পরিষেবা মিলবে বলে জানা গিয়েছে। বিএসএনএল জানায়, আসানসোল ও দুর্গাপুরে ১০১টি বিটিএস টাওয়ার রয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, উন্নত পরিষেবা দিতে টাওয়ারের সংখ্যা বেশ কম। এমনকি, প্রায় ২৫টি টাওয়ার এখনও ‘টু-জি’ ক্ষমতাসম্পন্ন! সেগুলিকে ‘থ্রি-জি’ ক্ষমতাসম্পন্ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জিএম বলেন, ‘‘উন্নত মানের বিটিএস টাওয়ার বসানো ও পুরনো টাওয়ারগুলির ক্ষমতা বাড়ানোর ফলে গ্রাহকেরা ল্যান্ডলাইন, মোবাইল ও ইন্টারনেটে উন্নত পরিষেবা পাবেন।’’ আগামী চার মাসের মধ্যেই এই উন্নত পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণবঙ্গের একটি বণিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দত্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বিএসএনএল দুই শহরে ফোর-জি চালু করছে, ভাল কথা। কিন্তু এই পরিষেবা অন্য বেসরকারি টেলি-সংস্থাগুলি অনেক আগে থেকেই শহরে দিচ্ছে। ফলে এত দিনে বিএসএনএলের এই পরিষেবা গ্রাহকদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement