ঝাঁঝরা খনি। ফাইল চিত্র
লাদাখে ভারত-চিন সঙ্ঘাতের পরে চিনের পণ্য বর্জন করতে চেয়ে অনেকে সরব হয়েছেন ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। এ বার সে পথে হেঁটে বিএমএস, সিটু, আইএনটিইউসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ইসিএল-এর কাছে চিনের প্রযুক্তি বর্জনের ডাক দিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের একাংশের প্রশ্ন, এই বর্জনের ফলে কয়লা উত্তোলনে প্রভাব পড়বে না তো!
ইসিএল-এর কোনও খনিতেই যেন নতুন করে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার না করা হয়, সে বিষয়ে দাবি জানিয়েছে আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএস। সংগঠনের ইসিএল শাখার সম্পাদক বিনোদ সিংহ বলেন, “চিনের প্রযুক্তি বয়কট করার বিষয়টি ইসিএল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীও বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব সবার আগে। তাই সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে এবং তার পরে পরিস্থিতি অনুকূল হলে তবেই চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। তার আগে নয়।” এই মুহূর্তে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহারের তাঁরাও বিরোধী বলে জানিয়েছেন আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লা উত্তোলনের পরিমাণ বাড়াতে বিভিন্ন খোলামুখ খনিতে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার এবং চিনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই, অণ্ডালের ঝাঁঝরা খনিতে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লা তোলাও হচ্ছে। এখানে ‘পাওয়ার সাপোর্ট ইন লংওয়াল মাইনিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরের খোট্টাডিহি খনিতে স্বয়ংক্রিয় খনন যন্ত্র বসানোর জন্য চিনা প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। সে যন্ত্রগুলি অবশ্য এখনও বসানো হয়নি।
ইসিএল-এর আধিকারিকেরা জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চিনের বিশেষজ্ঞ দলের আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতির জেরে কেন্দ্রীয় সরকার চিনের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখায় তাঁরা আসতে পারেননি। ঠিক ছিল, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই সম্ভাবনাও অনিশ্চিত বলে মনে করছেন খনি-কর্তাদের একাংশ।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহারে কোনও নিষেধাজ্ঞা আসেনি বলে জানান সংস্থার সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়। তাঁর বক্তব্য, “যে প্রযুক্তিগুলি ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলি চলবে। ভবিষ্যতে কী হবে তা পরবর্তী পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করছে।”
তবে দেশে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে অবশ্যই ইসিএল কর্তৃপক্ষের ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলে মনে করে পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে তৈরি ‘জয়েন্ট অ্যাকশান কমিটি’ (জ্যাক)। এই দাবির কথা সংস্থার কাছে জানানো হয়েছে বলে দাবি কমিটির আহ্বায়ক রামচন্দ্র সিংহের।