(বাঁ দিকে) সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের নজরে বাবলু যাদব (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পানাগড়কাণ্ডে ‘রেষারেষি করা’ সাদা রঙের গাড়ির মালিক তথা চালককে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। খোঁজ চলছে গাড়িচালকের চার সঙ্গীরও। পুলিশ জানিয়েছে, যে কোনও সময় ধরা পড়বেন গাড়িচালক তথা ব্যবসায়ী বাবলু যাদব। ধরা পড়লেই তাড়াতাড়ি তাঁকে আদালতে হাজির করানোর চেষ্টা হবে।
রবিবার চন্দননগর থেকে গয়া যাওয়ার পথে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার তথা নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। পরিবারের দাবি, দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে খুন হয়েছেন তিনি। সুতন্দ্রাদের গাড়িকে ধাওয়া করেন কয়েক জন ‘ইভটিজ়ার’। যদিও পুলিশ ‘ইভটিজ়িং’-তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। দাবি করা হয়েছে, জাতীয় সড়কের উপর রেষারেষির জেরে গাড়ি দুর্ঘটনা হয়। পুলিশের এই দাবির প্রেক্ষিতে মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, কেন সেই গাড়িতে থাকা কাউকে এখনও ধরতে পারল না পুলিশ? জাতীয় সড়কের উপর দুটো গাড়ি রেষারেষি করছে, সিসিটিভি-তে সেটা দেখেও কেন পদক্ষেপ করা হল না? এ সব প্রশ্নের জবাব মেলেনি। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, সুতন্দ্রাদের গাড়িতে যে গাড়ি ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ, তার চালক বাবলুর খোঁজে রয়েছে তারা। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যেই মুহূর্তে বাবলু ধরা পড়বে, সোজা ওঁকে নিয়ে আদালতে যাওয়া হবে।’’ পাশাপাশি সে দিন বাবলুর গাড়িতে থাকা আরও চার জনের খোঁজে রয়েছে পুলিশ। ‘দুর্ঘটনা’র পর তাঁরা সকলেই পলাতক বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার রাজ্যের সিআইডি ইনস্পেক্টর তাপস পাল-সহ চার সদস্যের একটি দল কাঁকসা থানায় গিয়েছিল। তারা বাজেয়াপ্ত করা দুটো গাড়িতে ঢুকে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে। তার পর তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডি ইনস্পেক্টর। তার মধ্যে মঙ্গলবার কাঁকসা থানায় নতুন একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগটি করেছেন রবিবার গাড়িতে থাকা সুতন্দ্রার এক সঙ্গী। এফআইআরে ‘ইভটিজ়িং’-এর উল্লেখ নেই। তবে রেষারেষি এবং তাঁদের গাড়িকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
যে সাদা রঙের গাড়ির সঙ্গে সুতন্দ্রাদের গাড়ির ধাক্কা লাগে, তার মালিক তথা চালক বাবলুর বাড়িতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু বাবলুকে পাওয়া যায়নি।
বাবলু বিবাহিত। সন্তানও রয়েছে। পুলিশ যাওয়ার পরে বাবলুর স্ত্রী কারও সঙ্গে কথা বলতে চাননি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর ৪৫-এর ওই যুবক পেশায় ব্যবসায়ী। পুরনো গাড়ির কেনাবেচা এবং লোহার কারবারের সঙ্গে যুক্ত। রবিবার বাবলুর গাড়িতে থাকা বাকি চার জন ওই কারবারের সঙ্গেই যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি গাড়ি চুরির মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কাঁকসার বাবলু। পুলিশ অবশ্য বলছে, তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে অপরাধের কোনও অভিযোগই নেই। অভিযুক্ত এখন কোথায়? কাঁকসা থানার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়ালের সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘বাবলু যাদবকে খুব তাড়াতাড়ি ধরা হবে।’’