ফাইল চিত্র।
শ্বশুরবাড়ির অমতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ায় স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে মারধর করে, জোর করে কীটনাশক খাওয়ানোর চেষ্টার অভিযোগ তুললেন এক বধূ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করিয়ে, হাতে স্যালাইনের নল নিয়েই স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ফাঁড়িতে হাজির হন আউশগ্রামের শিবদা গ্রামের বধূ মিনা খাতুন। তাঁর হয়ে পিসি হাফিজ়া বিবি থানায় মিনার স্বামী মহম্মদ নাসের ও তাঁর শ্বশুর গোলাম মোস্তাফার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে, ওই বধূকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। তার আগেই বধূর বিরুদ্ধে গালিগালাজ ও মারধরের অভিযোগ দায়ের হয় তাঁর শ্বশুরবাড়ির তরফে। জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, “অভিযোগ অনুযায়ী, তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিবদার মেয়ে মিনার সঙ্গে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মহম্মদ নাসেরের বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় এমএ-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া মিনার দাবি, “ভালবাসার সম্পর্কে রেজিস্ট্রি করে আমরা বিয়ে করি। তাঁদের অমতে বিয়ে করায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে মেনে নেননি। অশান্তি হওয়ায় এক বছর পরে, বাপের বাড়ি ফিরে আসি। তবে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তাঁর মতামত নিয়েই গত বছর স্নাতকোত্তরের জন্য ভর্তি হই।’’ মিনার অভিযোগ, এখন তাঁর স্বামী আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে দিতে রাজি নয়। মিনা পড়াশোনা করলে, তিনি অন্য জায়গায় বিয়ে করবেন বলে ভয় দেখাচ্ছেন। মিনার অভিযোগ, “আমি পড়াশোনা করে স্বাবলম্বী হতে চাই। ক’দিন ধরে আমাদের অশান্তি চলছিল। বাপের বাড়ির কাছে স্বামী নিজের মুরগির খামারের কাজে এসেছিলেন। আমি বাড়ির পাশে জামাকাপড় শুকোতে দিতে গেলে, উনি হামলা করেন। তার পরেই শ্বশুর সেখানে আসেন। দু’জনে মিলে জোর করে আমার মুখে কীটনাশক ঢালার চেষ্টা করেন। আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসায় রক্ষা পাই।’’
মিনার বাবা কদর শেখের অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকে মেয়েকে মারধর করছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পুলিশে অভিযোগও করা হয়। এ দিন ফের মেয়েকে মারধর করে ওর মুখে বিষ ঢালার চেষ্টা করল ওরা।’’ মিনার শ্বশুরের মোবাইলে ফোন করে নাসেরকে চাওয়া হলে, তাঁর ভাইয়ের পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বলব না। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। জেনে নিন।’’