এখানেই ফের গড়ে উঠবে পর্যটনকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
প্রায় দু’দশক আগে মাটির নীচে থেকে অনবরত গরম জলের স্রোত বেরোতে দেখেন বারাবনির পুচরার পানিফলার বাসিন্দারা। শেষমেশ পানিফলায় পর্যটনকেন্দ্রও গড়ে তোলে প্রশাসন। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে কোনও রকম রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এই মুহূর্তে প্রস্রবণ লাগোয়া যাবতীয় পর্যটন-পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফের এই পর্যটনকেন্দ্রটি সাজিয়ে তোলার আর্জি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৬-এ ব্লক প্রশাসন পর্যটনকেন্দ্রটি তৈরি করে। লাগোয়া পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় ৩৭ একর জমি দান করেন এই কেন্দ্রটির জন্য। ভিড় জমে পানিফলায়। আসানসোল, বার্নপুর, দুর্গাপুরের মতো এলাকার পাশাপাশি বীরভূমের বক্রেশ্বর-সহ ভিন্-জেলা, এমনকী ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু পর্যটক এখানে নিয়মিত ভিড়় জমাতেন। আয়ের মুখ দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। বাসিন্দারা জানান, কিন্তু ২০১০ থেকে সমস্যার সূত্রপাত। অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খণ্ডহরে পরিণত হয় এই পর্যটনকেন্দ্র। রোজগারের সুযোগও হারান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি এলাকার উন্নতি ও রোজগারের জন্য কেন্দ্রটি যাতে ফের চালু করা যায়, সে জন্য জেলা পরিষদের দ্বারস্থ হন বাসিন্দাদের একাংশ। অবশেষে সেই আবেদনে সাড়া মিলেছে। গ্রামাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নতির পাশাপাশি এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ। এর প্রথম ধাপ হিসেবে পানিফলা উষ্ণপ্রস্রবণ কেন্দ্রটি সংস্কার করা হবে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি সুধাকর কর্মকার বলেন, ‘‘পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে এলাকায় কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলের ভেঙে পড়া পর্যটনকেন্দ্রগুলির উন্নয়ন করা হবে। এই কাজের জন্য এক কোটি টাকার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’’
প্রস্তাবিত প্রকল্পে জলাশয়ে নৌ-বিহারের ব্যবস্থা করা হবে। বনভোজনের জন্য আলাদা বনাঞ্চল তৈরি, শিশুদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র, পর্যটক আবাস প্রভৃতি তৈরি করা হবে। সুধাকরবাবু জানান, পর্যটন দফতরের কাছে পাঠানো রিপোর্টে এই বিষয়গুলির উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘আগামী শীতের আগেই প্রকল্পের কাজ আংশিক শেষ হয়ে যাবে। পানিফলার প্রকল্পটির সফল রূপায়ণের পরে সালানপুরের মুক্তাইচণ্ডী-সহ একাধিক পর্যটনকেন্দ্রেরও পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।’’
পানিফলা উষ্ণ প্রস্রবণটি সংস্কারের খবর চাউর হতেই খুশির হাওয়া স্থানীয়দের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন কর্মকার বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রটি তৈরি হলে আমাদেরও রোজগার বাড়বে।’’