হাসপাতাল ‘দখলে’ই,  বাড়ছে দুষ্কর্ম

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মূল ভবন ও অনাময় হাসপাতালের ভিতর থাকা সব রকমের হকার উচ্ছেদ করতে হবে। হাসপাতালের বাইরে অনুমোদনহীন অ্যাম্বুল্যান্স ও অস্থায়ী ঘরগুলির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়াও হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে কর্মী বৃদ্ধির পাশপাশি টহল আরও বাড়াতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

‘নিষিদ্ধ’, তবুও দাঁড়িয়ে। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের বোর্ড টাঙানো রয়েছে— ‘সমস্ত রকম যানবাহন রাখা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ’। তারপরেও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বাইরে ফাঁকা অ্যাম্বুল্যান্সের লাইন কমেনি। এর সঙ্গে রয়েছে হকার-রাজ। একগুচ্ছ অস্থায়ী দোকান, ঘর, ফেরিওয়ালার ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই হাসপাতালে চত্বরে। আগেও বাইরের লোকের আনাগোনা কমাতে আর্জি জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাতে বহির্বিভাগের বারান্দায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরে ফের হকার উচ্ছেদ, পুলিশের টহল বাড়ানো-সহ নানা দাবিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে চিঠি দিলেন হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ।

Advertisement

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মূল ভবন ও অনাময় হাসপাতালের ভিতর থাকা সব রকমের হকার উচ্ছেদ করতে হবে। হাসপাতালের বাইরে অনুমোদনহীন অ্যাম্বুল্যান্স ও অস্থায়ী ঘরগুলির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়াও হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে কর্মী বৃদ্ধির পাশপাশি টহল আরও বাড়াতে হবে। সুপার জানিয়েছেন, ‘রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভবনে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এমন ঘটনা আটকাতে জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “২০১৬ সাল থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হকার ও অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে দাবি করছেন। বারবার আলোচনা হয়েছে। শেষে হাতেগোনা কয়েকজন হকারকে বসার অনুমোদন দিয়েছিল রোগী কল্যাণ সমিতি। বিষয়টি ফের আলোচনা করা হবে।’’ বর্ধমানের প্রাক্তন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি ছিল, “রোগীদের স্বার্থে হকার-অ্যাম্বুল্যান্স সরানোর প্রয়োজন রয়েছে।’’

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু অ্যাম্বুল্যান্স নয়, ফুটপাথ দখল করে থাকা দোকানের লোকজনও হাসপাতালে ঘটান নানা দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত। শুধু মাত্র রবিবারের ঘটনা অ্যাম্বুল্যান্স চালকের নাম জড়িত থাকা নয়, চিকিৎসক-নিগ্রহেও বারবার ওই সব বহিরাগতদের নাম উঠে এসেছে। উৎপলবাবুর কথায়, “গোটা রাজ্যে আর কোথাও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চত্বরে এ ভাবে হকার-অ্যাম্বুল্যান্সের দৌরাত্ম্য নেই।’’ হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের দাবি, এ সব সংগঠনের মাথায় রয়েছেন শাসক দলের প্রাক্তন বিধায়ক-কাউন্সিলরেরা। তাই অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয় না।

যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়ন। তাদের দাবি, ধৃত ভোলা ৫-৬ বছর আগে চিকিৎসার জন্য বর্ধমানে আসেন। তারপর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সঙ্গেই থেকে যান। তাঁর কাজ ছিল গাড়িগুলি পরিষ্কার করা। চালক শেখ সানি, শেখ বাবুলরা বলেন, “বিপদে-আপদে মানুষের পাশে থাকাটাই আমাদের কর্তব্য। ও আমাদের বিশ্বাস ধুলোয় মিশিয়ে দিল।’’

রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুশান্ত প্রামাণিক অবশ্য বলেন, “একটি ঘটনাকে সামনে রেখে অহেতুক সবাইকে দোষী করা ঠিক হচ্ছে না। বারবার একই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করছেন। সেটা মানাও হয়েছে। তারপরেও কী উদ্দেশ্য রয়েছে বোঝা যাচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement