এক সংগ্রাহকের পুরনো ঘড়ি। নিজস্ব চিত্র।
দেড়শো বছরের পুরনো রুপোর পানপাত্র, একশো বছরের পুরনো বই থেকে বিভিন্ন দেশের দুস্প্রাপ্য কয়েনে লুকিয়ে থাকা ইতিহাসের টানে ভিড় করলেন বহু মানুষ। কালনার রাজবাটী এলাকায় নেতাজি সাংস্কৃতিক সংস্থার মাঠে মহকুমা ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে রবিবার হয়ে গেল ইতিহাস মেলা। তুলে ধরা হয় টেরাকোটার নানা কাজও।
এ দিন মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তরফে পোস্টার প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। ছিল দু’টি বিভাগের আঁকা প্রতিযোগিতা। বিষয় ছিল কালনার মন্দির এবং তাতে টেরাকোটার কাজ। অনুষ্ঠান মঞ্চে কলকাতার এক বিশেষজ্ঞ কী ভাবে প্রাচীন কয়েন সংগ্রহ এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়, সে ব্যাপারে আলোচনা করেন। মেলায় হাজির ছিলেন টেরাকোটা বিষেশজ্ঞ তথাগত সেন। তবে সব থেকে বেশি আকর্ষণ ছিল পুরনো জিনিসপত্রের স্টলেই।
মেলা প্রাঙ্গনে নিজের স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে লক্ষণচন্দ্র দাস জানান, ৯৮ বছরের পুরনো একটি পকেটঘড়ি রয়েছে তাঁর। যা এখনও চলছে। কৌস্তভ দালাল বলেন, ‘‘বাড়িতে ১৫০ বছরের পুরনো দাবার বোর্ড এবং সরঞ্জাম ছিল। আজ তা অনেককে দেখালাম। বেশ ভাল লাগছে।’’ একটি স্টলে কালনা শহরের প্রাচীন চার্চের বেশ কিছু পুরনো নথি দর্শকদের দেখানো হয়। নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জন বলেন, ‘‘কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র বাবাকে একটি বই উপহার দিয়েছিলেন।তার বয়স প্রায় ১০০ বছর। এ ছাড়া অগ্নিবীণার প্রথম মুদ্রন-সহ বহু বছরের পুরনো বেশ কিছু বই বাড়িতে ছিল। সবার সঙ্গে সেই স্মৃতি ভাগ করে নিলাম।’’
মেলার আয়োজকদের তরফে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ গাইনেরা বলেন, ‘‘অজস্র ইতিহাস ছড়িয়ে রয়েছে আশেপাশে। সেই সব নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের উদ্দেশ্য।’’ স্থানীয় ইতিহাস গবেষক সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অনুষ্ঠান মঞ্চের নামকরণ হয়। জেলায় এমন মেলা এই প্রথম বলেও দাবি করেন তাঁরা।