ধোঁয়ায় ঢাকছে আকাশ, বাড়ছে বিপদ

এমনটা চলতে থাকলে এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা রয়েছে বলে মনে করছেন জেলার চিকিৎসকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবদদাতা

চুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০২:৪৭
Share:

প্রতীকী চিত্র

ফের আগুন। ফের চুরুলিয়ার বন্ধ খনিতেই। এ বার চুরুলিয়া গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে জয়নগর গ্রামে। গত সোমবার থেকে টানা চুরুলিয়ার ওই বন্ধ খনির নানা জায়গা থেকে আগুন, ধোঁয়া বার হচ্ছে। এর জেরে এক দিকে যেমন পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, তেমনই বসতি এলাকা কাছেই থাকায় বাড়ছে আতঙ্ক।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাজ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার চহিদা মেটাতে চুরুলিয়ায় ১৯৯৬-এ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি বেসরকারি সংস্থা কয়লা উত্তোলন শুরু করে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৫-র ১এপ্রিল বেসরকারি সংস্থা উত্তোলনের কাজ বন্ধ করে দেয়। এর পরে বছর খানেক বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম খনি চালু করার অনুমতি পেলেও তারা কাজ শুরু করেনি। ফলে খনিটি বন্ধই থেকে গিয়েছে।

খনি বন্ধ থাকলেও বন্ধ নয় আগুন, ধোঁয়া বার হওয়া। গত সোমবার প্রথম খনি থেকে আগুন বার হতে দেখা যায়। পুলিশ, দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। বাসিন্দারা জানান, সোমবার যেখানে আগুন জ্বলছিল, সেই খনিমুখটি যন্ত্রের সাহায্যে মাটি ভরাট করার পরে সেখানে আগুন নিভে যায়। কিন্তু মঙ্গলবার ফের আগুন বার হতে দেখা যায়। বুধবার সকাল থেকে ফের নতুন করে আরও তিনটি জায়গায় আগুন বার হয়। এর জেরে জয়নগর তো বটেই, চিচুরবিল, বিগুলি ও লোদার আকাশও মাঝেসাঝে ধোঁয়ায় ঢাকছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ দূষণ ও এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। রানিগঞ্জের পরিবেশকর্মী মঞ্জু গুপ্তের কথায়, ‘‘বায়ু দূষণের পাশাপাশি ভূমিক্ষয়ও ঘটতে পারে। চাষযোগ্য জমিতে বার বার ছাই পড়লে জমির উর্বরতা ক্ষমতা কমে যাবে। কয়লার স্তরে আগুন ধরে গেলে জনপদও বিপন্ন হতে পারে।’’ জানা গিয়েছে, ধোঁয়া ওঠার জেরে খনি লাগোয়া এলাকায় মিষ্টি গন্ধ ছড়াচ্ছে। ইসিএলের এক কর্তা জানান, কার্বনমনোক্সাইড গ্যাস সৃষ্টি হওয়ায় এমন গন্ধ ছড়াচ্ছে। খনি লাগোয়া দুলালপুরের বাসিন্দা সহদেব বাউরি, জয়নগরের বাসিন্দা জয় বাউরিরা বলেন, ‘‘ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। জানি না কত দিনে অবস্থা ঠিক হবে। আতঙ্কে দিন কাটছে।’’

এমনটা চলতে থাকলে এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা রয়েছে বলে মনে করছেন জেলার চিকিৎসকেরা। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের কথায়, ‘‘শ্বাসকষ্ট বেড়ে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা যেতে পারে। সব থেকে সমস্যায় পড়বেন হাঁপানি, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরা এবং শিশু ও প্রবীণ মানুষেরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement