চৌধুরী গোলাম মোস্তাফা হোসেন।
পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের। সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ পঞ্চায়েত সমিতির দোতলায় তাঁর ঘরের সামনেই বারান্দায় মেলে চৌধুরী গোলাম মোস্তাফা হোসেন (৪০) ওরফে মিঠুর দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ধন্দে, জানিয়েছে পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় আইনজীবী গোলাম মোস্তাফার বাড়ি আদতে রায়না ১ ব্লকের সেহারা অঞ্চলের আউশারা গ্রামে। তবে তিনি এখন বর্ধমান শহরের সরাইটিকরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। বর্ধমান আদালতে ওকালতি করতেন। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে নির্দিষ্ট সময়েই নিজের দফতরে এসেছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তিনি ছাড়া, অন্য সব সদস্য রায়না ২ ব্লকে তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে বেরিয়ে যান।
পুলিশ ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা যায়, তার খানিক পরেই এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী দরজা বন্ধ করতে গিয়েছিলেন। তখনই বারান্দায় সিলিং ফ্যান থেকে নাইলনের দড়ির ফাঁসে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দেহ নজরে পড়ে তাঁর। তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন। খবর দেওয়া হয় বিডিও সৌমেন বণিককে। রায়না থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুলন্ত দেহের সামনে একটি টুল পড়ে ছিল। দেহ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গোলাম মোস্তাফার বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী রেশমি বিবি এবং এক শিশুকন্যা। তাঁর দাদা আজম চৌধুরী বলেন, ‘‘পারিবারিক কোনও অশান্তি ছিল না। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ফোন করেছিলাম। তখন ভাই জানিয়েছিল, আজ আদালতে যাবে না। পঞ্চায়েত সমিতিতে কাজ রয়েছে, তাই সেখানে গিয়েছে বলে জানায়। এর পরে বিকেল ৫টা নাগাদ দুঃসংবাদ পাই।’’ গোটা ঘটনা নিয়ে তাঁরা ধন্দে বলে দাবি পরিজনদের।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশকে উপযুক্ত তদন্ত করতে বলেছি।’’ বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা-র বক্তব্য, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পুলিশ দেখুক, ঠিক কী ঘটেছে।’’ এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পরে ওই কর্মাধ্যক্ষ আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে সুইসাইড নোট মেলেনি। তদন্ত চলছে।’’