প্রতিবাদ: সোমবার কুলটিতে। ছবি: পাপন চৌধুরী
জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে বছরের শুরুর দিকে। দোরগোড়ায় নতুন বছর। অথচ, এখনও পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির সর্বত্র পানীয় জলের সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ। পর্যাপ্ত পানীয় জলের দাবিতে সোমবার জি টি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কুলটির কলেজমোড় এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। প্রায় দু’ঘণ্টা চলে অবরোধ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তোলে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী সাত দিনের মধ্যেই ইতিবাচক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ দিকে, আচমকা এই অবরোধের জেরে বিপাকে পড়েন কয়েকহাজার নিত্যযাত্রী।
কুলটিতে একটি নতুন জল প্রকল্প তৈরি করেছে তৃণমূল পরিচালিত বিদায়ী আসানসোল পুরবোর্ড। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসে জেলা সফরে এসে দুর্গাপুর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, কিন্তু এর পরেও কলেজমোড়ের বহু জায়গায় এখনও জলের পাইপলাইন পাতা হয়নি। গৃহসংযোগ তো দূরের কথা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধায়ক ও জল দফতরের বিদায়ী মেয়র পারিষদকে বহু বার এই সমস্যার কথা জানিয়েও লাভ হয়নি।
প্রতিকারের দাবিতে এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কয়েকশো বাসিন্দা প্ল্যাকার্ড নিয়ে জি টি রোডের মাঝখানে বসে পড়েন। যাতায়াত একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রায় দু’বছর ধরে তাঁরা জলকষ্টে ভুগছেন। বারবার বলার পরেও পুর-কর্তৃপক্ষের তরফে পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা পল্লব সরকার বলেন, ‘‘এই শীতেও কুয়োর জল প্রায় শেষ হতে চলেছে। প্রতি মাসে অন্তত দু’হাজার টাকার জল কিনতে হচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কলেজমোড়ের আশপাশ এলাকা, রামকৃষ্ণ সরণি, বিবেকানন্দপল্লি-সহ আরও কিছু পাড়ায় জলের তীব্র সঙ্কট চলছে। কিছু এলাকায় পুরসভার জলের পাইপলাইনই পাতা হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা, কলেজ শিক্ষক বিজন বিশ্বাসের ক্ষোভ, ‘‘গৃহসংযোগ নেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা জমা করেছি। ঘরের সম্পত্তি করও মিটিয়েছি। তবুও পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।’’
বিদায়ী মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় বলেন, ‘‘কলেজ রোড ও কলেজমোড় এলাকায় পাইপলাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছে। সে কাজ শেষ হলেই সকলেই জল পাবেন।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় এখনও প্রায় ৬০০ মিটার পাইপলাইন পাতার কাজ বাকি আছে। পুরসভার সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডলের আশ্বাস, ‘‘দ্রুত বাকি কাজ শেষ করে কুলটির সর্বত্রই জল পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
এ দিকে, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে অবরোধ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কুলটির বাসিন্দাদের একাংশ। রাস্তা ও জলের দাবিতে জি টি রোড অবরোধ করে আন্দোলনের প্রবণতা বন্ধ করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।