‘কাটমানি’ ফেরত নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ চিচুরিয়ায়

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ির টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার এক তৃণমূল নেতা কাটমানি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০০:০৪
Share:

‘কাটমানি’কে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ বাধল জামুড়িয়ার চিচুরিয়ায়। চিচুরিয়া পঞ্চায়েতের সিদ্ধপুর গ্রামে শনিবার রাতে দু’জন জখম হন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ির টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার এক তৃণমূল নেতা কাটমানি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ সিদ্ধপুর দুর্গামন্দির চত্বরে গ্রামের ষোলআনা কমিটির উদ্যোগে এ নিয়ে সভা বসে। সেখানে কোনও নিষ্পত্তি না হওয়ায় সভা শেষের পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বেধে যায়। পুলিশ গিয়ে তাদের হটিয়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই সভায় স্থানীয় বাসিন্দা শিবনাথ ঘোষ অভিযোগ করেন, এলাকার তৃণমূল নেতা অভিজিৎ পালের বিরুদ্ধে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রথম দফার বরাদ্দ থেকে ‘কাটমানি’ নিয়েছেন। পুরো টাকা না পাওয়ায় বাড়ি তৈরি করতে পারেননি এবং দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও পাননি বলে তাঁর অভিযোগ। কিন্তু অভিজিৎবাবু কাটমানির কথা অস্বীকার করে দাবি করেন, দলের চাঁদা হিসেবে টাকা নেওয়া হয়েছিল। তাই তা ফেরতের প্রশ্ন নেই। এর পরেই সভায় হাজির দুই তৃণমূল নেতা যাদব পাল ও ধীরাজ পাল টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি তোলেন। দু’পক্ষের চাপানউতোরে কোনও সমাধান হয়নি। সভা ভেঙে যায়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তার পরেই তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দু’পক্ষ লাঠি, বাঁশ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দু’জন জখম হন। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘যাদব, ধীরাজেরা মানুষকে বিভ্রান্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে গোলমাল পাকাচ্ছে। কাটমানি নেওয়ার কোনও প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি। সালিশি সভা শেষ হতেই যাদবদের নেতৃত্বে আমাদের উপরে হামলা হয়েছে। আমরা প্রতিরোধ করেছি।’’ পুলিশের কাছে হামলার অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। যাদববাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আমরা দলের কার্যালয়ে বসে ছিলাম। অভিজিতেরা আমাদের উপরে চড়াও হয়।’’ তাঁর দাবি, জনরোষ থেকে বাঁচতে টাকা ফেরত দিতেই হবে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকায় দলের দুই নেতা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুকুমার ভট্টাচার্যের অনুগামীদের মধ্যে অনেক দিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে। যাদববাবু, ধীরাজবাবুরা এলাকায় সুকুমারবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অভিজিৎবাবুরা আবার প্রদীপবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। দু’পক্ষের কোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে, দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। সুকুমারবাবুর বক্তব্য, ‘‘দলের নাম ভাঙিয়ে যাঁরা দুর্নীতি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রশ্ন নেই।” প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘কাটমানির অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। তা হলেই দল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”

তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “কী ঘটেছে তা দলীয় স্তরে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement