উপরে ওঠার পথ বন্ধ করে চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
পাইপ ফেটে জলমগ্ন পূর্ত দফতরের অফিস। জলের মধ্যেই চেয়ারে বসে কাজ করছেন কর্মীরা। অফিসে আসা সাধারণ মানুষও জলে পা ডুবিয়েই যাতায়াত করছেন। সপ্তাহের প্রথম দিন এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল বর্ধমান শহরের পূর্ত ভবন।
সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায় আটতলা পূর্ত ভবনের নীচের তলার শিশু সুরক্ষা দফতরের সামনে জল থইথই অবস্থা। দোতলার সিঁড়ি দিয়ে ঝর্ণার মতো জল নেমে আসছে। সেই জল টপকে জুতো ভিজিয়ে অফিসে ঢুকছেন বিভিন্ন কাজে আসা মানুষ। শিশু সুরক্ষা দফতরের ভেতরের মেঝেতেও গোড়ালি ডোবা জল। কর্মীদের কয়েকজন ঘরের দেওয়ালে ফুটো করে জল বের করার চেষ্টা করছেন। ওই দফতরের এক কর্মী কাঞ্চন দাঁ বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার অফিস করে বাড়ি গিয়েছিলাম। তারপরে তিন দিন ছুটি ছিল। এ দিন এসে দেখি গোটা অফিসে জল। শুনলাম দোতলায় জলের পাইপ ফেটে এই বিপত্তি।’’ দপ্তরের আর এক কর্মী শেখ নিজাম আলি জানান, অফিসের মেঝেতে, নথিপত্র জমা রাখার ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে। বেশ কিছু কাগজপত্রও নষ্টও হয়ে গিয়েছে।
ভবনের দোতলায় রয়েছে পূর্ত দফতরের অফিস। জানা গেল, সেই অফিসের একটি ঘরের বেসিনের পাইপ ফেটেই এই বিপত্তি। ফলে দোতলায় উচ্চ সড়ক বাস্তুকারের অফিস, সিঁড়ি সহ অন্য অফিসও জলমগ্ন। এই ভবনের আটতলা জুড়ে বহু সরকারি দফতর রয়েছে। হাজার খানেক কর্মী-সহ প্রতিদিন নানা কাজে বিপুল সংখ্যক মানুষের আসাযাওয়া চলে। এ দিন অসুবিধেয় পড়েন সবাই। জল পেরিয়ে আসা এক কর্মী নির্মল কুমার চৌধুরীর প্রশ্ন, ‘‘তিন দিন অফিস বন্ধ ছিল, কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষী তো ছিল। তারা এই বিষয়ে কেন রিপোর্ট করল না? যদি তা হত তাহলে আজকের এই জল যন্ত্রণা সহ্য করতে হত না।’’ অফিসে ব্যক্তিগত কাজে আসা বর্ধমান শহরের বীরহাটার বাসিন্দা রুনু প্রামাণিক ও রবীন প্রামাণিক বলেন, ‘‘জল পেরিয়ে অফিসে ঢুকতেই রাগ হচ্ছিল। তারপর দেখলাম অফিসের বাবুরাই জলে চেয়ার পেতে বসে রয়েছেন।’’
যদিও অফিস খোলার পরে এ দিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত শুরু করে পূর্ত দফতর। দোতলার ওঠার সিঁড়িতে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেটে যাওয়া পাইপ মেরামত করা হয়। এরপর সাফাই কর্মীরা অফিসের মধ্যের জল পরিষ্কার করতে নেমে পড়েন। দফতরের জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়র বিবেকানন্দ চৌধুরীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘‘জলের পাইপ ফেটে ছিল, ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।’’