কাজি নজরুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটেকে সাজিয়ে তোলা ও কবির স্মৃতিকে সংরক্ষণে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় এক বছর আগে পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু এখনও সেই প্রকল্পের জন্য টাকা আসেনি বলে সূত্রের দাবি। এই পরিস্থিতিতে কবে কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কবির নানা ধরনের ব্যবহৃত সামগ্রীর সংগ্রহশালা চুরুলিয়াতে আছে। সেখানে কবির পাণ্ডুলিপি আছে। কিন্তু সেগুলি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নয়। সেগুলিকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংগ্রহশালা তৈরি হবে। যুব আবাসটির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, কবির ভিটেকে নবরূপে সাজানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই কাজগুলির জন্যই ২০২২-এর গোড়ায় বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্য তা অনুমোদনও করে।
উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রকল্প। কয়েকটি ধাপে টাকা আসবে। প্রথম পর্যায়ে দু’কোটি টাকা আসার কথা।” তাঁর সংযোজন: “গবেষকদের জন্য পরিকাঠামো, বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুলকেন্দ্র তৈরির পরে বাংলাদেশের সঙ্গে মউ সই হবে। এই সব পদক্ষেপের ফলে গবেষকদেরপাশাপাশি এলাকার পর্যটন শিল্পেও গতি আসবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আসানসোলের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও সাহিত্যিক নিবেদিতা আচার্য, চিকিৎসক তথা সংস্কৃতিকর্মী অরুণাভ সেনগুপ্তেরা।
কিন্তু সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের প্রশ্ন, উদ্যোগ, পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু হবে কবে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল স্টাডি সেন্টারের প্রাক্তন ডিরেক্টর শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “আমরা আশা করেছিলাম, এই উদ্যোগ সফল করতে সরকারি অনুদানটি সময়ে চলে আসবে। কিন্তু সেটা আসেনি বলে কাজ শুরু হল না।আমরা চাই, দ্রুত এই অনুদান পাঠানো হোক।” যদিও, দেবাশিসের বক্তব্য, “নজরুল অ্যাকাডেমিকে সাজিয়ে তোলার জন্য আমরা যে প্রকল্প বানিয়েছি, তাতে সরকার অর্থ সাহায্য করছে। আশা করি, এই প্রকল্পের জন্য বছরের শেষে টাকা চলে আসবে। তার পরে কাজে হাত পড়বে।”
দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ চাইছে কবির পরিবারও। কবির ভ্রাতুষ্পুত্র এবং নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, “উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভাল কথা। এই বারে দ্রুত তা রূপায়ণের কাজ শুরুহলেই ভাল।”
কিন্তু এখনও টাকা আসেনি কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে জামুড়িয়ার তৃণমূলের বিধায়ক হরেরাম সিংহ বলেন, “দ্রুত যাতে টাকা আসে, সে জন্য বিধানসভায় বিষয়টি জানাব।”