ফাইল চিত্র।
আধার কার্ডের জন্য শিবির হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল এমন ভুয়ো বার্তা। তার জেরে ভিড় জমল ব্লক কার্যালয়ে। সেই ভিড় সরাতে লাউডস্পিকার ভাড়া করে প্রচার চালাতে হল ব্লকের কর্মীদের। বুধবার কিছু লোক জড়ো হয়োছিলেন কাঁকসা ব্লক অফিসে। বৃহস্পতিবার সংখ্যাটা অনেক বেড়ে যায়। বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোথা থেকে যে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ল বুঝতে পারছি না। সাধারণ মানুষ হয়রান হচ্ছেন।’’
সম্প্রতি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে কে বা কারা একটি বার্তা ছড়িয়ে দেয়, আধার কার্ডে ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা হবে। নতুন আধার কার্ডও করা যাবে। ২৮-৩০ অগস্ট, তিন দিন ধরে শিবির হবে কাঁকসা ব্লক অফিসে। সেই খবর লোকমুখেও ছড়িয়ে পড়ে আরও অনেকের কাছে। অথচ, আধার কার্ড সংক্রান্ত কোনও কাজ ব্লক অফিসে হওয়ার কথা নেই এখন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার অনেকেই আসেন আধার কার্ডের সংশোধন বা নতুন কার্ড করানোর জন্য। তবে সংখ্যায় তাঁরা খুব বেশি ছিলেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার ভিড় জমতে দেখে বিপাকে পড়েন ব্লক অফিসের কর্মীরা। লম্বা লাইন পড়ে যায়। বার্তাটি যে ভুয়ো, সে কথা প্রত্যেককে বোঝাতে গিয়ে কাজকর্ম মাথায় ওঠে কর্মীদের। এর জেরে অন্য নানা প্রয়োজনে অফিসে আসা মানুষজনও সমস্যায় পড়েন।
শেষ পর্যন্ত, ব্লক অফিসে না ঢুকে দূর থেকেই যাতে মানুষজন বিষয়টি জানতে পেরে ফিরে যান, সে জন্য লাউডস্পিকারে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তড়িঘড়ি দু’দিনের জন্য ভাড়া করা হয় দু’টি লাউডস্পিকার। দু’দিনের মোট ভাড়া ১৮০০ টাকা। শুরু হয় ঘোষণা, ‘কাঁকসা ব্লকে আধার কার্ডের কোনও কাজ হচ্ছে না। কাজ শুরু হলে জানিয়ে দেওয়া হবে। দয়া করে গুজবে কান দেবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া খবর যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিন।’
আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ন’পাড়া গ্রাম থেকে এসেছিলেন ত্রিশূল পণ্ডিত। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছিলাম, আধার কার্ডের কাজ হবে। তাই এসেছিলাম। এত দূর থেকে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে।’’ মৃণাল শিকদারের কথায়, ‘‘মোবাইলে আসা একটি খবর দেখে এসেছিলাম। এসে শুনছি, তা ভুয়ো। আমার মতো অনেকেই এসে ফিরে যাচ্ছেন।’’ পাড়ার এক জনের কাছে খবর পেয়ে এসেছিলেন পানাগড় বাজারের জ্যোতি কুমারী। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এসে লাউডস্পিকারের ঘোষণায় শুনছি, খবর ভুয়ো। এ ভাবে হয়রান হতে হবে ভাবিনি।’’
ব্লক অফিসের কর্মীরা জানান, ভিড় সামলাতে পুলিশ ডাকতে হয়। সেই সঙ্গে মাইকে প্রচারও করতে হয়। বিডিও জানান, সাধারণ মানুষ যাতে এ ভাবে হয়রান না হন সে জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতকে মাইকে এই ভুয়ো বার্তার বিরুদ্ধে প্রচার করতে বলা হয়েছে।