মেমারিতে জমা জলে দুর্ভোগ বাসিন্দাদের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
জল জমে প্রতিবারই। এ বার দোসর জমে থাকা আবর্জনা।
মেমারি পুরসভার বেশ কিছু এলাকা তো বটেই গ্রামীণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেও জল জমে চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহাল নিকাশির জন্যেই এই হাল শহরের। তার মধ্যে প্রায় তিন সপ্তাহ আবর্জনা নেওয়া বন্ধ। ফলে যততত্র জমা নোংরা জলে একাকার হয়ে টেঁকা দায় হয়ে পড়েছে শহরবাসীর।
গত বছরও মেমারির বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সে সময় পুরসভা নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর আশ্বাস দেয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ দূরে থাক, পাশের বাগিলা পঞ্চায়েতের সঙ্গে টানাপড়েনে জিটি রোডের ধারে ডাম্পিং গ্রাউন্ডেও আবর্জনা ফেলতে পারছে না পুরসভা। দূষণের দোহাই দিয়ে পুরসভার আবর্জনার গাড়ি আটকে দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে শহরের মধ্যের আবর্জনাও তুলছেন না পুরসভার সাফাই কর্মীরা।
প্রবীণ বাসিন্দা সুশীল বিশ্বাস বলেন, “নর্দমা আবর্জনা ভর্তি। নোংরা জল উপচে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়েছে।’’ বামুনপাড়া মোড়, শ্রীদুর্গাপল্লি, সারদাপল্লি, অরবিন্দপল্লি, মাঠপাড়া, সুলতানপুর, নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তার মতো বহু এলাকারই এই হাল। মেমারির রসিকলাল স্কুলের এক শিক্ষিকার ক্ষোভ, “অপরিকল্পিত ভাবে নর্দমা তৈরি করায় স্কুলের জল বেরোতে পারছে না। মাঠ জলমগ্ন। মিড-ডে মিল রান্নায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।” সুলতানপুরের শ্যামাদাসি রায়, মঞ্জু ক্ষেত্রপাল, শ্যামলী ক্ষেত্রপালদের ক্ষোভ, “পুরকর্তারা নিকাশির হাল ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’
পুরসভা সূত্রেই জানা যায়, শহরের নিকাশির হাল ফেরানোর জন্য গাঙুর নদীর সংস্কার শুরু করা হয়েছিল। শহরের ভিতর দিয়ে বড় নর্দমা তৈরি করে গাঙুরে ফেলারও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। তার উপর জুটেছে আবর্জনা সমস্যা। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বাগিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে বসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মূহুর্তে সভা ভেস্তে যায়। আবর্জনা সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা সন্তোষ বোয়াল বলেন, “জানি, আবর্জনা আর বৃষ্টির জলে শহরবাসী নাজেহাল। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।” আজ, বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের (বর্ধমান দক্ষিণ) ডাকা বৈঠকে সমাধান হবে বলে আশাবাদী সন্তোষবাবু।