TMC Panchayat Member

স্বামী দিনমজুর, নিজেও ক্ষেতমজুর হিসাবে কাজ করেন গলসির পঞ্চায়েত শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা

পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষা হয়েও কৃষিজমিতে কাজ করেন রূপালি। সমিতির কাজকর্মের পাশাপাশি বাড়ির কাজকর্ম সবই করতে হয় তাকে। রূপালি উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:১৩
Share:

গলসি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা রূপালি হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র।

স্বামী ভিন্‌রাজ্যে শ্রমিক। সংসারের খরচ যোগাতে হিমসিম খেয়ে তাঁকেও নামতে হয়েছে ক্ষেতমজুরির কাজে। অথচ পদে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা। রাজ্যে যখন শাসকদলের বহু নেতা-মন্ত্রী থেকে পঞ্চায়েত প্রধান বা সদস্য, আবাস যোজনার দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে, সেখানে ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছেন রূপালি হাঁসদা। রূপালির বাড়ি গলসির সাটিনন্দী গ্রামে। তিনি পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষা। কিন্তু তাতে কী! অভাব-অনটন রূপালির সংসারে নিত্যসঙ্গী। রুজিরুটির জন্য পরের জমিতে ক্ষেতমজুর হিসাবে কাজ করেন তিনি। তবুও আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে তিনি শাসকদলের নাম করে বা সাধারণের উপর হম্বিতম্বি করে কোনও দিন কারও কাছে এক টাকাও নিয়েছেন, এমন বদনাম তাঁর নেই।

Advertisement

পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষা হয়েও কৃষিজমিতে কাজ করেন রূপালি। সমিতির কাজকর্মের পাশাপাশি বাড়ির কাজকর্ম সবই করতে হয় তাকে। রূপালি উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। সংসার চালাতে তাঁর স্বামী কালীচরণ হেমব্রম বর্তমানে ভিন্‌রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি নিজেও দিনমজুরের কাজ করেন। সাটিনন্দী গ্রামের তাঁদের নিজেদের চাষের জমিজায়গা নেই। একটু বসতভিটে থাকলেও তা ইট, সিমেন্ট, রডের তৈরি পাকা বাড়ি নয়। বরং চারিদিকে ধসে পড়া এবং জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাটির বাড়ি।

রূপালির কথায়, ‘‘বিয়ের আগে থেকেই তিনি ক্ষেতমজুরের কাজ করি। প্রতি বছরই দু’তিন বিঘে জমি ভাগে চাষ করি। পাশাপাশি দিনমজুরিও করি। স্বামীর উপার্জনের টাকা থেকে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি ছেলের পড়াশোনা এবং অসুস্থ শাশুড়ির চিকিৎসার খরচও জোগাতে হয়। ঘরে জল ছাড়া সব কিছুই কেনা।’’

Advertisement

এই প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা দল করি। তাই তাঁর আদর্শকে আমরা মানার চেষ্টা করি। দিদির আদর্শকেই পাথেয় করে চলছে রূপালি।’’

রূপালির কাজের প্রশংসা করেছেন খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগও। তিনি বলেন, ‘‘ওটা আমারই বিধানসভা এলাকা। আমাদের দলনেত্রী মমতার নীতি আদর্শ এই রকমই। পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতেই রূপালি হাঁসদার মতো বহু সদস্য-সদস্যা আছেন।’’

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, যেখানে রাজ্য জুড়ে বহু পঞ্চায়েত নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, সেখানে রূপালি ব্যতিক্রমী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement