জোরকদমে কাজ চলছে মণ্ডপ তৈরির কালনায়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
এলাকার বড় উৎসব সরস্বতী পুজোর জন্য তৈরি হচ্ছে কালনা। উৎসব উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন ক্লাব নানা থিমের প্রতিমা এবং মণ্ডপ তৈরির কাজে নেমে পড়েছে। অনেক মণ্ডপেরই কাজ এগিয়ে গিয়েছে বেশ কিছুটা।
শনিবার শহর ঘুরে দেখা গিয়েছে, বহু শিল্পী মণ্ডপ গড়ার কাজ করছেন। জিউধারা বারোয়ারি সমিতির মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে দেড় কুইন্টালের বেশি সংবাদপত্র দিয়ে। মণ্ডপটি সাজিয়ে তুলছেন স্থানীয় শিল্পী বাপ্পা দাস। সংবাদপত্র পচিয়ে তৈরি করা হয়েছে বেশ কিছু মডেল। সেগুলি ঠাঁই পেয়েছে মণ্ডপের ভিতরে। মোবাইলের নেশায় বুঁদ হয়ে কী ভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় হয়ে যাচ্ছে, সংবাদপত্রের বিক্রেতাদের জীবনযাত্রা কেমন, এ ধরনের বেশ কিছু বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেখানে। সংবাদপত্রের টুকরো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রংবেরঙের নৌকা ও ঝাড়বাতি। শিল্পীর কথায়, ‘‘একটু অন্য রকম কিছু করার জন্য সংবাদপত্র দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, দর্শকদের ভাল লাগবে।’’
খড়, পাটকাঠি, কাপড়, তেঁতুলের ছাল, তালপাতা, পালক-সহ নানা উপকরণে জাপট এলাকার অগ্নিবীণা ক্লাব তাদের মণ্ডপ সাজিয়ে তুলছে। ১১০ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট চওড়া এই মণ্ডপের থিম ‘এক টুকরো পুরুলিয়া’। গোটা মণ্ডপ জুড়ে পুরুলিয়ার পাহাড়, ছৌ নৃত্য-সহ নানা সংস্কৃতি তুলে ধরছেন শিল্পীরা। যোগীপাড়া পুরাতন সঙ্ঘের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে খড় ও দড়ি দিয়ে।শিল্পী মৃত্যুঞ্জয় পাল জানান, ৮ফুটের এই প্রতিমা পরিবেশবান্ধব। দর্শকেরা মণ্ডপে নতুনত্বের স্বাদ পাবেন বলে দাবি তাঁর।
অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে শহরের জগন্নাথতলা এলাকার শিব মন্দির। প্রাচীন এই মন্দিরটির অনুকরণে গোলক সমিতি তৈরি করছে তাদের মণ্ডপ। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্লাই, বাঁশ, কাঠ-সহ নানা সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপটি। আসল মণ্ডপে যেমন টেরাকোটার কারুকাজ রয়েছে, তা নানা সামগ্রীর মাধ্যমে মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এ ছাড়া, শহরের সপ্তর্ষি সঙ্ঘ ‘টুইন টাওয়ার’, সমন্বয় লালকেল্লা, বহ্নিশিখা বর্ণিল, রুপালিকা বরফের দেশে, বারুইপাড়া বারোয়ারি ডোকরা শিল্প, তালবোনা প্রান্তিক ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’, তরুণ সমিতি সুন্দরবন, আমলাপুকুর ইয়ং বয়েজ় ‘প্রকৃতি রতনে সাজাব যতনে’, যুব সঙ্ঘ ‘ভাবনা’, শ্যামগঞ্জপাড়া বারোয়ারি ‘সহজ পাঠ’ থিমে মণ্ডপ তৈরি করছে।
শহরের বাসিন্দা গোবর্ধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত দু’বছর করোনার কারণে অনেক ক্লাবই বড় বাজেটের পুজো করতে পারেনি। এ বার বহু ক্লাব জাঁকজমকের সঙ্গে পুজো করছে। কয়েকটি ক্লাব ভাল অনুষ্ঠানের আয়োজনও করছে বলে জানা যাচ্ছে।’’