এই মেছো বিড়ালটিকেই তির মারা হয়েছিল। ফাইল চিত্র
বাঘ ঢুকেছে, গুজবের জেরে একটি মেছো বিড়ালকে (ফিশিং ক্যাট) পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল কাটোয়ার চাণ্ডুলি ও আমডাঙা এলাকায়। পরে নিরীহ প্রাণিটিকে তির ছোড়া হয়। ঘোরানো হয় গ্রামে। এ ধরনের ঘটনা রুখতে ও বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে নানা পদক্ষেপ করছে বন দফতর। মঙ্গলবার কাটোয়া বন দফতরের তরফে বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলি করা হয়। বনকর্মীদের একাংশ গ্রামে ঘুরে অযথা গুজব না ছড়ানোর আবেদন জানান। চোরা শিকারিদের দেখলেই দফতরে খবর দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় ও ভাগীরথীর ধার বরাবর ঝোপ-জঙ্গলে অনেক বন্যপ্রাণী থাকে। নদীতেও অনেক সময় ডলফিন, কচ্ছপের দেখা মেলে। তাই চোরা শিকারিদের রুখতে জলপথেও নজরদারি চালাতে শুরু করেছেন বনকর্মীরা। কাজের সুবিধার জন্য রাজ্য সরকার কাটোয়া রেঞ্জ অফিসে একটি স্পিডবোটও বরাদ্দ করেছে। বনকর্মীদের দাবি, ডলফিন ধরতে না পারলেও কচ্ছপ ধরে প্রায়ই খোলাবাজারে বিক্রি করে দেয় পাচারকারীরা। তাই সচেতন করা হচ্ছে। বাড়ানোর হচ্ছে নজরদারি।
বন দফতরের দাবি, কাটোয়া মহকুমা এলাকা জুড়ে কোথাও হিংস্র বন্যপ্রাণী নেই। শুধু গন্ধগোকুল, মেছো বিড়াল দেখা যায়। মেছো বিড়ালের চেহারার সঙ্গে চিতাবাঘের কিছুটা মিল থাকায় অনেক সময়েই আতঙ্ক দেখা দেয়। কিন্তু এরা মানুষের ক্ষতি করে না। বরং মানুষের উপস্থিতি জানতে পারলেই ভয়ে লুকিয়ে পড়ে ওই ধরনের প্রাণীরা। এ ছাড়া, নদীর পাড়ে রাতের দিকে শিয়াল দেখা গেলেও তা লোকালয়ে ঢোকে না বলে জানান বনকর্মীরা।
এ দিন কাটোয়ার চাণ্ডুলি গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত বটব্যাল জানান, ‘‘আমাদের এলাকায় বাঘ ঢোকার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবুও গ্রামে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। একটি বিরল প্রজাতির মেছো বিড়ালকে অমানবিক ভাবে মেরে ফেলা হল।’’ প্রশাসনের তরফে সচেতনতা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুকান্ত ওঝা বলেন, ‘‘নানা কারণে বহু বন্যপ্রাণী সমাজের বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এলাকায় বাঘ ঢোকার কোনও রাস্তা নেই। তা ছাড়া, বাঘ প্রথমে গবাদি পশুর উপরে হামলা চালায়। এ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি বন্যপ্রাণীদের আঘাত করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, দাবি তাঁর।