খাসকাজোড়ায় উদ্ধার করা হচ্ছে আহত কর্মীদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
ডুলি খুলে খনিগর্ভে পড়ে যাওয়ায় জখম হলেন পাঁচ জন কর্মী। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে অণ্ডালের কাজোড়া এরিয়ার খাসকাজোড়া কোলিয়ারির ১০ নম্বর খনিতে। জখমদের মধ্যে তিন জনকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকি দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ঘণ্টাখানেক উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখায় শ্রমিক সংগঠনগুলি। এরিয়া কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, দ্রুত তদন্ত শেষ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মদন কর্মকার, রামজিৎ সিংহ, সুনীল বাউরি, দুলাল মুচি ও রামজি সিংহ ডুলিতে চেপে খনিতে নামছিলেন। হঠাৎ প্রায় ১৫ ফুট উঁচু থেকে ডুলি নীচে আছড়ে পড়ে। তাঁদের মধ্যে আঘাত গুরুতর মদনবাবু, সুনীলবাবু ও দুলালবাবুর। বাকি দু’জনকে ইসিএলের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ফেরার সময়ে রামজিবাবু জানান, ঘটনার পরে নীচে থাকা সহকর্মীরা তাঁদের লাগোয়া ১১ নম্বর খনির ডুলিতে চাপিয়ে উপরে তুলে আনেন।
এই ঘটনার পরেই শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছেন সিটু, কেকেএসসি-সহ নানা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তাঁদের দাবি, ডুলির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাওয়ায় এই বিপত্তি। সিটু নেতা প্রবীর মণ্ডল, কেকেএসসি নেতা গুরুদাস চক্রবর্তীদের অভিযোগ, ‘‘সকালের এই পালিতে যে কর্মী ডুলি চালানোর কাজ করছিলেন, তিনি অদক্ষ। শুধু তাই নয়, ডুলিগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। এ সবের জেরেই বারবার এমন বিপত্তি ঘটেছে।’’
বিক্ষোভকারীরা জানান, এর আগে গত ১১ অগস্ট এই কোলিয়ারির ৬ নম্বর খনিতে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় এক কর্মীর মৃত্যুও হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ‘সেফটি বেল্ট’ ছাড়াই এক কর্মীকে দিয়ে ডুলি চালানোর কাজ করানো হচ্ছিল। পা পিছলে খনিগর্ভে পড়ে যাওয়ায় ওই কর্মীর মৃত্যু হয়। প্রবীরবাবুদের দাবি, ‘‘খনিতে সুরক্ষার বিষয়টি যে বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে, ফের ডুলি খুলে যাওয়ার ঘটনায় তা প্রমাণিত। দু’টি ঘটনারই দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’’ ইসিএলের সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য দাবি করেন, নিরাপত্তার দিক থেকে কোনও গাফিলতি নেই। তবে কী হয়েছে, তা তদন্ত চলছে।