—ফাইল চিত্র।
জেলার দুই লোকসভা আসনেই দলের পরাজয়ের জন্য দায়ী ‘সায়েন্টিফিক রিগিং’! শুক্রবার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক হিসেবে মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম আসানসোলে প্রথম বার এসে এমনই দাবি করলেন। বিজেপি অবশ্য রাজ্যের মন্ত্রীর এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে।
এ দিন আসানসোলের সাতটি বিধানসভা এলাকার দলীয় নেতা, কর্মীদের নিয়ে কর্মিসভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে যোগ দিয়ে ফিরহাদ দাবি করেন, ‘‘গত লোকসভা ভোটে আসানসোল এবং বর্ধমান-দুর্গাপুর, দুই কেন্দ্রেই বিজেপি সায়েন্টিফিক রিগিং করে জিতেছে।’’
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আসানসোলের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের সাতটিতেই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল। অন্য আসনটিতে চারটি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল এগিয়ে ছিল। কিন্তু ভোটের ফলে তৃণমূল মুখ থুবড়ে পড়ে দুর্গাপুর পূর্ব, পশ্চিম এবং গলসি বিধানসভা এলাকায়।
সেই হারের প্রসঙ্গ তুলেই দলের নেতা, কর্মীদের সামনে ‘সায়েন্টিফিক রিগিং’-এর দাবি করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।’’ কিন্তু ফিরহাদের এই মন্তব্যের পরেই সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা সকলেই গেরুয়া-ঝড় দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন।’’ সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন: ‘‘রিগিং করাটা তৃণমূলের অভ্যাস। গত পঞ্চায়েত ভোট যার প্রমাণ। আসানসোলের সাংসদ তাঁর কাজ এবং দলের জন্য গত বারের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ভোটে জিতেছেন এ বার। একই কারণে বর্ধমান-দুর্গাপুরেও এ বার মানুষ বিজেপিকে বেছে নিয়েছেন।’’ সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের মনোবল এখন তলানিতে। তাই এ সব বলে সান্ত্বনা খুঁজছেন।’’
ঘটনাচক্রে, লোকসভায় ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সায়েন্টিফিক রিগিং’-এর অভিযোগে সরব হয়েছিল বিজেপি।
এ দিন তৃণমূলের ওই বৈঠকে মন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং নানা এলাকার বিধায়কেরাও যোগ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, বৈঠকে ব্লক স্তর থেকে দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার আহ্বান করার আর্জি জানান ফিরহাদ। প্রয়োজনে ব্লক স্তরের কমিটিগুলি পরিমার্জনও করা হতে পারে বলে জানান তিনি। ব্লক স্তরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই নজরের কারণ প্রসঙ্গে জেলার স্থানীয় নেতাদের অনুমান, গোষ্ঠী কোন্দলে রাশ টানার বার্তাও দেওয়া হল।