ভস্মীভূত: বর্ধমানের কুণ্ডুপুকুর এলাকায় ছাই গুদাম। নিজস্ব চিত্র
ভাঙাচোরা জিনিসের গুদামে আগুন লাগল বর্ধমানে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেই আগুন গুদাম থেকে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের তিনটি বাড়িতেও। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্লাস্টিক, কাগজ-সহ নানা পুরনো জিনিস ডাঁই করে রাখা ওই গুদামে বাজি থেকে আগুন ধরে যায় বলে দমকলের প্রাথমিক অনুমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুণ্ডুপুকুর এলাকায় ওই গুদামটির মালিক শেখ আমির নামে এলাকার এক ব্যক্তি। এ দিন ভোরে গুদামের সামনে রাখা একটি কাগজ বোঝাই গাড়িতে আগুন ধরে। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দাহ্যবস্তুতে বোঝাই গুদামে। পোড়া গন্ধে ঘুম ভেঙে যায় এলাকাবাসীর। খবর দেওয়া হয় দমকলে। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় মানুষজন জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
গুদামের ঠিক পাশে একটি বাড়ির জানলার কাঠে আগুন ধরে যায়। তা ঘরের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে যায় বেশ কিছু জিনিসপত্র, বাড়ির ছাদে জলের ট্যাঙ্ক। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রচণ্ড তাপে গোটা তিনেক বাড়ির দেওয়াল ও ছাদের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। তাঁরা বাড়ি থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বার করে বাইরে নিয়ে আসেন। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা দিলীপ সিংহ, রজক আলি, স্বপন হাজররা বলেন, ‘‘তীব্র আঁচে ঘুম ভেঙে দেখি, জানলা জ্বলছে। গোটা ঘরে ধোঁয়া। দৌড়ে বাইরে চলে গিয়ে দেখি, নীচের গুদাম দাউদাউ করে জ্বলছে।’’
দমকল এলেও গাড়ি ঢুকতে দেরি করে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে দমকল জানায়, সরু গলি ও রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা বিভিন্ন যানবাহনের জন্য গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়। অনেকটা ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে দমকলের ইঞ্জিনগুলি পৌঁছয়। পাশের পুকুর থেকে জল তুলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। প্রচুর পুরনো কাগজ, প্লাস্টিক মজুত থাকায় আগুন আয়ত্তে আনতে বেগ পেতে হয় বলে জানান দমকল কর্মীরা। ধোঁয়ায় গোটা এলাকা ঢেকে যায়। বর্ধমান থানা থেকে প্রচুর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা একরাম খান, অমর খান, রাজু খান, শেখ ইসরাইলরা অভিযোগ করেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই এলাকায় প্রচুর বাজি ফাটছিল। উড়ছিল দেদার ফানুস। কোনও ভাবে বাজির আগুন থেকেই গুদামের বাইরে রাখা কাগজের গাড়িতে আগুন ধরে যায় বলে তাঁদের অনুমান। গুদাম মালিকের ভাই বাবর খানেরও একই দাবি।
আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর অরূপ দাস ও বিদায়ী চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল খোকন দাস। খোকনবাবু বলেন, ‘‘এলাকবাসীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এই এলাকায় প্রচুর বাজি ফেটেছে। বাজির ফুলকি থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।’’