Asansol

আগুনে পুড়ল ঝুপড়ি, মৃত এক

রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে অনেকেই জিনিসপত্র খুঁজে চলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৩
Share:

আসানসোল উত্তর থানার ধাদকার বাইপাস লাগোয়া বস্তিতে আগুন। নিজস্ব চিত্র।

রাত সাড়ে ৯টা দাউ-দাউ করে জ্বলছে বস্তি। কাছে-পিঠে আড্ডা দিতে থাকা কয়েকজন যুবক বালতি-বালতি জল ঢেলে, ধুলো, বালি ছড়িয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কয়েকজন, এর মধ্যেই শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল উত্তর থানার ধাদকার বাইপাস লাগোয়া তপসি বাবা মন্দির এলাকার এই ঘটনায় অন্তত পাঁচটি ঝুপড়ি পুড়ে ছাই হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে রাজকুমারী গুপ্তা (৬১) নামে এক মহিলা। জখম পাঁচ জন। শনিবার রাতের ঘটনা।

Advertisement

আসানসোল পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। তবে, ততক্ষণে ওই পাঁচটি ঝুপড়ি পুড়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দমকলের প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আশপাশের ঝুপড়িগুলিতেও জল ছেটানো হয়। দমকলের আসানসোলের আধিকারিক দোবায়ণ পোদ্দার বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে প্রাথমিক ভাবে দমকলকর্মীরা জানান, প্রদীপের শিখা থেকে আগুন ধরেছে। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি ঝুপড়িতে জেনারেটর ও বেশ কিছু ডিজেল মজুত ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ ভাবে সক্ষম রাজকুমারীদেবী ঝুপড়িতে একাই থাকতেন। তিনি অগ্নিকাণ্ডের সময়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরোতে পারেননি।

রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে অনেকেই জিনিসপত্র খুঁজে চলেছেন। তাঁদেরই একজন সীমা দেবী বলেন, ‘‘দীপাবলির অনুষ্ঠান শেষ করে আমরা কয়েকজন উঠোনে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ দেখি দাউ-দাউ করে আগুন ও ধোঁয়া চতুর্দিকে। ছুটে এসে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেও পারিনি।’’ স্থানীয় যাঁরা আগুন নেভানোর জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন মহম্মদ ইসরাফিল বলেন, ‘‘আমরা কয়েকজন বন্ধু কিছুটা দূরে মাঠে বসে গল্প করছিলাম। হঠাত দেখি, বস্তিতে আগুন ধরেছে।’’

Advertisement

রবিবার সকালে ঘটনাস্থল যান এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মলয়বাবু। জিতেন্দ্রবাবু জানান, যাঁদের ঝুপড়ি পুড়ে গিয়েছে পুরসভা তাঁদের বাড়ি বানিয়ে দেবে। প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আপাতত ক্ষতিগ্রস্তদের স্থানীয় একটি ত্রাণ শিবিরে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। জিতেন্দ্রবাবু বলেন ‘‘মৃতের নিকটাত্মীয়দের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়েও পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ দিকে, শনিবার রাত ৯টায় কুলটির নিয়ামতপুরের আজাদবস্তি এলাকার একটি বাড়িতেও আগুন ধরে। গৃহকর্তা মজহিদ আনসারি পুলিশকে জানান, তাঁরা কোনও ভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পরারেন। তিনি বলেন, ‘‘ বোনের বিয়ে উপলক্ষে নগদ টাকা, গয়না রাখা হয়েছিল। কিন্তু সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।’’ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর মীর হাসিম। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকারআশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement