প্রতীকী ছবি।
ভিন্ন ধর্মে প্রেম ভালবাসার কারণে জেরে মেয়েকে নৃশংস ভাবে খুনের দায়ে বাবা ও দাদাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমান আদালত। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্তদের নাম নিহত তরুণী জাহানা খাতুনের বাবা মহম্মদ মুস্তাক ও দাদা মহম্মদ জাহিদ। তাঁদের বাড়ি বিহারের মুজাফর জেলার মোশাহারি ব্লকেএলাহাদাদ গ্রামে। এই রায়ে তাঁরা অখুশি জানিয়ে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, নিম্ন আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
২০১৮ সালের ৩১ অগষ্টের ঘটনা। ওই দিন সকালে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার নবগ্রাম-ময়না এলাকায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশ থেকে উদ্ধার হয় জাহানার রক্তাত দেহ। ওই দিনই পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে,ওই তরুণীকে প্রথমে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিৎ করতে ভারী পাথর দিয়ে আঘাত করা হয় মাথায়। ময়নাতদন্তকারীরা পুলিশকে এও জানায়, মেহেন্দি দিয়ে তরুণীর ঊরুতে তিনটি মোবাইল ফোন নম্বর ও ‘করণ’ লেখা রয়েছে।
এর পরেই খুনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। তার ১০ দিনের মধ্যেই মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ফেলা হয়। কলকাতার পার্কসার্কাস সংলগ্ন বেনিয়াপুকুর এলাকা থেকে পুলিশ প্রথম তরুণীর দাদা জাহিদকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে বাবা মুস্তাকের জড়িত থাকার কথাও জানা যায়। এর পর কলকাতার তিলজলা এলাকায় হানা দিয়ে মুস্তাককে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনকে থানায় বসিয়ে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে ’করণ’ হল জাহানার প্রেমিক। সে ভিন ধর্মের জেনেও জাহানা তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তা মেনে নিতে না পেরেই জাহানাকে তারা খুন করে।
সরকারী আইনজীবী সন্দীপ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লাভ জেহাদের জেরে নিজের মেয়েকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তরুণীর বাবা ও দাদাকে। কারাবাসের পাশাপাশি তাদের ১৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।’’