বিক্ষোভে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র
বেসরকারি গ্যাস উত্তোলক সংস্থার বর্জ্য জলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষজমি। ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। বার বার আবেদন জানিয়েও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। এই সব অভিযোগে সোমবার ওই সংস্থার কার্যালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কাঁকসার মলানদিঘির চাষিদের একাংশ। তাঁদের দাবি, তিন বছর ধরে তাঁদের ফসল নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না। সংস্থার তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
তাঁদের দাবি, গত তিন বছর ধরে ওই জলে চাষ করলেই ফসমলানদিঘির পাশ দিয়ে গিয়েছে কুনুর নদী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর সেই নদীর জলে এলাকার বহু মানুষ চাষাবাদ করেন। জল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ, এলাকায় থাকা গ্যাস উত্তোলক সংস্থার বর্জ্য জল মিশছে কুনুরের জলে। ফলে, দূষিত হচ্ছে জল। এর প্রভাব মলানদিঘি ছাড়াও আকন্দারা এলাকায় কৃষিক্ষেত্রে পড়ছে বলে দাবি চাষিদের। চাষি নিতাই মণ্ডলের দাবি, ২০২০ থেকে এই সমস্যায় হচ্ছে। বার বার প্রশাসন থেকে সংস্থা, সব জায়গায় জানিয়েও সুরাহা মিলছে না বলে অভিযোগ। আর এক চাষি রাজনারায়ণ কেশ দাবি করেন, ২০২০-২১ সালের বোরো ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল এলাকায়। আবার এ বছর আমন ধানের বীজতলায় কুনুরের জল দেওয়ায়, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেকে ধান রোপণের পরেও জল দেওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। চাষিদের দাবি, ওই গ্যাস উত্তোলক সংস্থার বর্জ্য জল কুনুর নদীতে ফেলা অবিলম্বে বন্ধ করার পাশাপাশি, তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ দিন সকাল থেকে সংস্থার হরিকির কার্যালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন চাষিদের একাংশ। চাষি অমল শ্যামের অভিযোগ, তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়লেও, কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ওই গ্যাস উত্তোলক সংস্থা। দ্রুত সমস্যা না মিটলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে এলাকায় যান মলানদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা চাষিদের সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছি। দ্রুত দাবিগুলি পূরণ করার ব্যবস্থা করা হবে।” এ বিষয়ে ওই সংস্থার এক আধিকারিক সুমন রায় জানান, চাষি ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে। বিডিও (কাঁকসা) পর্ণা দে বলেন, “ইতিমধ্যেই পরিবেশ দফতরের তরফে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরাও চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। রিপোর্ট পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”