প্রতীকী ছবি।
পড়ুয়াদের বিনা খরচে স্মার্টফোন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার—এই মর্মে হোয়াটস অ্যাপে একটি ‘ভুয়ো’ লিঙ্ক ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠল অণ্ডালের উখড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরেই সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানালেন বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরা। বিডিও বলেন, ‘‘সরকার থেকে এমন কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। বুধবার রাতে খবর পেয়ে উখড়া পুলিশ আউটপোস্টে ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়। কার ফোন থেকে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের ভুয়ো প্রচারে কান না দেওয়ার জন্য প্রচার চালানো হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সরকার পড়ুয়াদের বিনা খরচে স্মার্টফোন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। মাধাইগঞ্জ রোডে উখড়ার আনন্দপুর মোড়ের কাছে একটি সাইবার ক্যাফে থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে অনলাইনে সে সংক্রান্ত আবেদনপত্র পূরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে বিষয়টি বিডিও-কে জানান। এর পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ক্যাফের মালিককেউখড়া আউটপোস্টে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ওই ক্যাফের মালিক কাজল সূত্রধরের দাবি, তাঁর কাছে প্রথমে উখড়া পিজি বালিকা বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী এসে দেখান, তাঁর হোয়াটস অ্যাপে এ সংক্রান্ত একটি খবর এসেছে। ওই পড়ুয়া তাঁর হোয়াটস অ্যাপে দেওয়া ‘লিঙ্ক’-এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে বলেন। সেই মতো কাজলবাবু তাঁর আবেদনপত্র পূরণ করে দেন। বিনিময়ে তিনি ক্যাফের খরচ বাবদ ৩০ টাকা নেন। কাজলবাবু বলেন, “এর পরে আমার মনে হয়েছিল, এমন সুযোগ এলাকার অন্য পড়ুয়ারা পেলে ভাল হয়। তাই আমি এলাকার আরও ন’জন পড়ুয়াকে ক্যাফেতে ডেকে ৩০ টাকা করে নিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে দিয়েছি। এর পরে প্রশাসনের কাছে জানতে পারি, এটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। সঙ্গে সঙ্গে আবেদনপত্র পূরণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’’
এ দিকে, পিজি বালিকা বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া রাখি রুইদাসের দাবি, “আমাদের স্কুলের পঠনপাঠনের জন্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ আছে। সেই গ্রুপ-এ এ দিন বিনা পয়সায় স্মার্টফোন দেওয়ার খবর কেউ পোস্ট করে। সেটি দেখে আমি সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করেছি। পরে বুঝতে পারলাম, তা ভুয়ো।’’ এ প্রসঙ্গে পিজি বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা ইপ্সিতা দে বলেন, “পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের জন্য যে গ্রুপ আছে, সেখানে কী ভাবে এমন বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হল তা জানা নেই।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানানো হয়েছে, কার ফোন থেকে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।