চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে পরীক্ষা স্থগিত হল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (ইউআইটি)। জানা গিয়েছে, তিন পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন আটকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন না। অনৈতিক ভাবে তাঁদের আটকানো হচ্ছে দাবি করে সোমবার ওই তিন জনের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হন বাকি পড়ুয়ারাও। কলেজের গেট আটকে বসে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, ঢুকতে দেওয়া হয়নি অধ্যক্ষকেও। ফলে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। পড়ুয়াদের দাবিকে সমর্থন করেছেন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মিত্র। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই তিন জন সরকারি নিয়ম মেনে ভর্তি হননি। ফলে তাঁদের কোনও ভাবেই পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। কার মাধ্যমে, কী ভাবে ওই তিন জন ভর্তি হয়েছেন, তা তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে অধ্যক্ষকে।
ইউআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ইন্দ্রনীল রায়, অরিজিৎ দে এবং ইলেকট্রিক্যালের সোনি কুমারী তৃতীয় বর্ষের পঞ্চম সিমেস্টারের পড়ুয়া। ২০২০ সালে কোডিভ পর্বে তাঁরা ভর্তি হন এই কলেজে। কেউই জয়েন্ট পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হননি। কলেজের দাবি, কোভিড পর্বে অনেকেই জয়েন্ট পরীক্ষা দিতে পারেননি। সেই কারণে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে তাঁদের ভর্তি নেওয়া হয়। বিষয়টি শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় বিধায়ককেও জানানো হয়। অধ্যক্ষের দাবি, ওই সময় অনেক কলেজই এ ভাবে ভর্তি নিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালে রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দেয়, জয়েন্ট ছাড়াও উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট দিয়ে যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের গ্রাহ্য করা হবে। সেই অনুযায়ী ওই তিন জন আড়াই বছর কলেজে পড়াশোনা করেছেন। ফি দিয়েছেন। দু’বছর পরীক্ষা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের রেজাল্টও দিয়েছে। তাহলে সমস্যা কোথায়?
ওই তিন পড়ুয়ার দাবি, ভর্তির তিন বছরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম। এ বার রেজিস্ট্রেশন করাতে গেলে জয়েন্ট না দেওয়ার কারণ দেখিয়ে তাঁদের আটতে দেওয়া হয়। তাঁদের প্রশ্ন, চারটি সিমেস্টার দেওয়া, রেজাল্ট পাওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত কেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বার আবেদন করেও লাভ না হওয়ায় এ দিন অবস্থান, বিক্ষোভে বসেন, দাবি তাঁদের। পাশে দাঁড়ান অন্য পড়ুয়ারাও। দেবরাজ সাহা, লুনা রাউত, প্রীতি চৌধুরীরা বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় যেটা করেছে, সেটা ঠিক নয়। তাই পরীক্ষা বয়টক করা হয়েছে।’’ এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা এবং দুপুর দেড়টার পরীক্ষা স্থগিত হয়। অধ্যক্ষ কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবে তাঁকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
পরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই ভর্তি হয়েছে। এতদিন ওই পড়ুয়ারা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের নিয়ম মেনে পড়াশোনা করেছে। রেজাল্ট পেয়েছে। হঠাৎ পঞ্চম সেমিস্টারের কেন তাঁদের আটকে দেওয়া হবে? বিশ্ববিদ্যালয়য়ের এই ব্যাপারে মানবিক হওয়া উচিত।’’
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়য়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী বলেন, ‘‘ওঁরা সরকারি নিয়ম মেনে ভর্তি হননি। তাই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না।’’