Durgapur Projects Limited

ডিপিএলে কর্মীদেরই প্রবেশে না

বর্তমানে বীরভূমে কর্মরত শান্তনু ভৌমিক জানান, গত এক বছরে বদলি হওয়া আট জন সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, “মৃত সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩২
Share:

চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারের সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) উদ্বৃত্ত কর্মীদের সরকারের অন্য দফতরে বদলি করা হয়েছে বছরখানেক আগে। বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ে ওই কর্মীরা অরাজনৈতিক ফোরাম গড়েছেন। শনিবার সেই ফোরামের কাগজপত্র ডিপিএলের প্রশাসনিক ভবনে জমা দিতে এলে নিরাপত্তারক্ষীরা গেট বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে গেটে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ফোরামের সদস্যেরা এর ফলে নানা অসুবিধা এবং অমানবিক আচরণের অভিযোগ তোলেন।

Advertisement

ডিপিএলের কোকআভেন প্ল্যান্ট ২০১৫-র ৩ জুন বন্ধ হয়। রুগ্ণ ডিপিএলকে বাঁচাতে সেটিকে অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএলের মালিকানা চলে যায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। শুরু হয় ডিপিএলে উদ্বৃত্ত কর্মী সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ। দেখা যায়, কোকআভেন প্ল্যান্ট ছাড়াও পাওয়ার প্ল্যান্টের বিভিন্ন বিভাগে অতিরিক্ত কর্মী রয়েছেন। এমন প্রায় ৩৩২ জন কর্মীকে অন্য সরকারি দফতরে বদলি করার সরকারি নির্দেশিকা আসে ২০২২-এর ২২ ডিসেম্বর। তাঁদের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূমে ডেপুটেশনে পাঠানো হয়।

ওই কর্মীদের অভিযোগ, যাতায়াতের ধকল এবং মানসিক চাপে জর্জরিত তাঁরা। তাঁরা জানান, অন্য দফতরে কাজ করলেও তাঁরা আদতে ডিপিএলের কর্মী। তাঁদের মেডিক্যাল-সহ অন্য দাবি-দাওয়া যা, সেটা ডিপিএলকেই জানাতে হয়। তা ছাড়া, পে-স্লিপ নিতেও আসতে হয় ডিপিএলে। পৃথক-পৃথক ভাবে না এসে সম্মিলিত ভাবে দাবিদাওয়া জানানোর জন্য একটি অরাজনৈতিক ফোরাম গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইনে নথিবদ্ধ হয়েছে ফোরামটি। সেই কাগজ এ দিন ফোরামের কয়েক জন প্রতিনিধি ডিপিএল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে এসেছিলেন। তখনই সমস্যা হয়।

Advertisement

বর্তমানে বীরভূমে কর্মরত শান্তনু ভৌমিক জানান, গত এক বছরে বদলি হওয়া আট জন সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, “মৃত সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান ছিল। এর পরে আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়ে ফোরামের কাগজপত্র জমা দিতেন। আমাদের ঢুকতেই দেওয়া হল না। কর্মীদের প্রতি সংস্থার এ কেমন আচরণ!” সরব হয়েছেন জামিউল ইসলাম নামে আরও এক জন। তাঁর কথায়, “আমরা ডিপিএলের স্থায়ী কর্মী। প্রতি মাসে পে-স্লিপ নিতে আসি। আমাদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হল না। পুলিশ ডাকা হল। কেন?” একই অভিযোগ করেছেন অর্চনা বাউড়ি নামে আরও এক জন। রোগে আক্রান্ত এক কর্মী বলেন, “মেডিক্যাল বিল জমা দিতে হবে। সেই খোঁজ নিতে এসেছিলাম। মুম্বই যেতে হবে। অর্থের অভাবে কী ভাবে চিকিৎসা হবে জানি না!”

পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়েসুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। তবে বিক্ষোভকারীরা জানান, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন। ডিপিএলের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সজলসুন্দর দীর্ঘাঙ্গী কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। তার পরে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু কেমন আচরণ, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ডিপিএলের আধিকারিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement