জরিমানা আদায় করে ৩৪% রাজস্ব বৃদ্ধি করেছে পূর্ব বর্ধমানের পরিবহণ দফতর। প্রতীকী চিত্র।
পূর্বস্থলীতে গুলি-কাণ্ডের পরে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই (ওভারলোড) গাড়ির উপরে নজরদারিতে জেলা পরিবহণ দফতরের কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তার পরেও সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে (২০২২-২৩) জরিমানা আদায় করে ৩৪% রাজস্ব বৃদ্ধি করেছে পূর্ব বর্ধমানের পরিবহণ দফতর। যা রাজ্যে সর্বোচ্চ বলে জেলার প্রশাসনের কর্তাদের দাবি।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, গত অর্থবর্ষের চেয়ে পরিবহণ দফতর ৭ কোটি টাকা বেশি জরিমানা আদায় করেছে। গত বছরে (২০২১-২২) জেলা পরিবহণ দফতর স্রেফ ওভারলোড থেকে জরিমানা বাবদ ২০.৫৮ কোটি টাকা আদায় করেছিল। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবর্ষে সে বাবদ এসেছে ২৭.৬০ কোটি টাকা। পূর্ব বর্ধমানের পরে জরিমানা আদায়ে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা সোমবার বলেন, “এ বার জরিমানা বাবদ রাজস্ব আদায় ৩৪.১১% বেড়েছে। ক্রমাগত নজরদারি থাকায় আয় বেড়েছে।’’ রাজ্যে এই রাজস্ব আদায় গত বছরের ১১৭ কোটি টাকা থেকে এ বার হয়েছে ১৫৪ কোটি টাকা।
জেলার আধিকারিকদের দাবি, গত বছরের মতো এ বারও জেলা জরিমানা আদায়ে শীর্ষে রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে, অতিমারির সময়ে জেলা পরিবহণ দফতর ১২.৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল। এ বার রাজস্ব আদায় এতটাবৃদ্ধির কারণ কী? পরিবহণ দফতরের দাবি, জেলাশাসক বৈঠক করে ‘ওভারলোড’ বন্ধে জোর দিতেবলেন। পুলিশকেও অভিযানে সহায়তা করার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসন, পরিবহণ দফতর ও পুলিশকে নিয়ে যৌথ কমিটি গঠন হয়। নিয়মিত অভিযান চলতে থাকে। এর মধ্যে পূর্বস্থলীতে অভিযানে বেরোনো দফতরের গাড়ি লক্ষ করে গুলির ঘটনায় নজরদারিতে প্রভাব পড়ে।ঠিক হয়, পুলিশের সঙ্গে যৌথঅভিযান বাধ্যতামূলক। তার পরেফের নড়ে বসেন দফতরের কর্তারা। জানা গিয়েছে, গত বছর মে মাসে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা আদায় হয়। তার পরে প্রতি মাসেগড়ে দেড় কোটি টাকা করে আদায় হয়েছে।
প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, জেলায় শক্তিগড়ে রয়েছে একমাত্র ‘চেকপোস্ট’। সে জন্য রাস্তায় নেমে অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়। জরিমানা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল। মূলত, জেলায় বালি ও পাথরের গাড়িতেই ‘ওভারলোড’-এর জরিমানা বেশি হয়েছে। বাসেরছাদে যাত্রী তোলার জন্যও জরিমানা করা হয়েছে। জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (আরটিও) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “গত তিন বছর ধরেই জরিমানা বাবদ রাজস্ব আদায় বেড়েছে। জেলাশাসকের নেতৃত্বে ক্রমাগত নজরদারির জন্যই রাজ্যে সর্বোচ্চ জরিমানা আদায় করা সম্ভব হয়েছে।’’