ডিপিএল-এর ক্রেডিট সোসাইটির অফিসের সামনে। নিজস্ব চিত্র
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)-এর সমবায় সমিতির নির্বাচন কেন করতে দেওয়া হচ্ছে না? সম্প্রতি দুর্গাপুরে এসে এই ধুয়ো তুলে দিয়ে গিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত, দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা সেই দাবিতেই ডিপিএল-এর সমবায় সমিতির সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরে, তাঁরা কর্তৃপক্ষকে দাবিপত্র দেন।
ডিপিএল-এ দু’টি সমবায় রয়েছে। ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’ এবং ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস এমপ্লয়িজ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’। ১১ জন করে সদস্য রয়েছেন। দু’টি সমবায়েরই মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই।
রাজ্যে পালা বদলের পরে নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসে। প্রতি তিন অন্তর নির্বাচন হওয়ার কথা। তা আর হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপির। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত ১৯ জুলাই সমবায় দু’টির মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে চিঠি গিয়েছে রাজ্য সমবায় দফতরে। দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি সে আর্জির পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন, করোনা- পরিস্থিতির জন্য নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। তাই পরবর্তী কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান কমিটিকেই নির্বাচনের মাধ্যমে কাজ করতে দেওয়া হোক। তিনি বলেন, ‘‘কর্মীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য এই আর্জি জানানো হয়েছে।’’
এরই মধ্যে ডিপিএল-এর জমি বিক্রির রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ২০ জুলাই দুর্গাপুরে সভা করে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবু। সে সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ডিপিএল-এর সমবায় সমিতির নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছে না। আপনারা আদালতের দ্বারস্থ হন। আমি প্রয়োজনমতো আইনি সাহায্যের ব্যবস্থা করব।’’ অবিলম্বে নির্বাচনের দাবিতে সোমবার কাউন্সিলর চন্দ্রশেখরবাবু বিজেপি কর্মীদের নিয়ে ডিপিএল-এর সমবায় সমিতির দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরে, তাঁরা ঢুকে পড়েন সমবায় কার্যালয়ের ভিতরে। সমবায় সমিতির সিনিয়র ম্যানেজার গৌতমকুমার মুখোপাধ্যায়কে দাবিপত্র দেওয়া হয়।
চন্দ্রশেখরবাবুর দাবি, ‘‘দ্রুত নির্বাচন চাই। পুরনো কমিটিকে দায়িত্ব না দিয়ে স্পেশাল অফিসার, স্পেশাল অডিটর নিয়োগ করা হোক। অডিট হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সাতটি বিধানসভায় উপনির্বাচন করবেন বলছেন। তার আগে, এখানে নির্বাচন হোক।’’ তাঁর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে কোয়ার্টার বিলি, গাছ বিক্রি-সহ নানা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বর্তমান কমিটি।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি শিপুল সাহার মন্তব্য, ‘‘বিজেপি ভেবেছিল, এ বার রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আসবে। মানুষজন তাদের বর্জন করেছেন। তাই তৃণমূলকে বদনাম করতে তারা এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’ এ দিকে সমবায় আধিকারিক গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ডিপিএল-এর সমবায় পরিচালিত হচ্ছে। নির্বাচনের দাবি নিয়ে ওঁরা এসেছিলেন। নির্বাচন নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়। প্রতি বছর সরকারি অডিট হয়।’’