জল-কাদায়: বুথে চলেছেন ভোটকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
হাজার দুয়েক পুলিশকর্মী। মোট ভোটকর্মী প্রায় সাড়ে তিন হাজার। সমস্ত বুথে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা। দুর্গাপুরে পুরভোট নির্বিঘ্নে শেষ করতে আঁটোসাটো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানাল প্রশাসন। যদিও বিরোধীরা ভোটের আগের দিন, শনিবারও হামলা-হুমকির মুখে পড়ার অভিযোগ করেছে। ভোটের কাজে এসে থাকার জায়গায় অব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছেন কিছু পুলিশকর্মীও।
শহরের প্রায় চার লক্ষ কুড়ি হাজার ভোটার ১৩৬ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন আজ, রবিবার। সকাল ৭টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। কোথাও পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন হলে তা হবে ১৬ অগস্ট। ফল ঘোষণা ১৭ অগস্ট। শহরে মোট ৪৯১টি বুথের মধ্যে সর্বাধিক ২১টি বুথ রয়েছে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে। সবচেয়ে কম চারটি বুথ ২ নম্বর ওয়ার্ডে। মহকুমা রিটার্নিং আধিকারিক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘ভোটারদের অসুবিধা যাতে না হয় সে জন্য ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ছাউনি, অস্থায়ী শৌচাগার, খাবার জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ৬ জন করে পুলিশকর্মী থাকবেন। তাঁদের মধ্যে চার জন বন্দুকধারী। সাড়ে চারশো মহিলা পুলিশকর্মী থাকছেন। এ ছাড়া প্রায় পাঁচশো জন থাকছেন রিজার্ভে। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো যা করার তা করা হয়েছে।’’
ভোটে চলল দুর্গাপুর
এক নজরে
কন্ট্রোল রুমের নম্বর: ০৩৪৩-২৫০০০৯১/৯২/৯৩/৯৫/৯৬
পর্যবেক্ষক
সুমন হাওলাদার (ওয়ার্ড ২৩-৪৩)
ফোন: ৭৪৭৭৭৯৮১১৩
কিন্তু শনিবারই সিপিএমের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ভোটের আগে উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি শহরে। পুলিশের তরফে ঠিকমতো নাকাবন্দি করা হয়নি বলে দাবি নেতাদের। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘হিংসা ও রক্তপাতহীন নির্বাচন করানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। অথচ, তার পরেও দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহর জুড়ে। তাদের আটকানোর কোনও ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। নির্বিঘ্নে ভোট না হলে ১৬ অগস্ট ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব আমরা।’’ পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ সতর্ক আছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরভোটের কাজে আসা হাওড়া কমিশনারেটের একশো জন পুলিশকর্মী ও ৬০ জন হোমগার্ডের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এমএএমসি মডার্ন হাইস্কুলে। তাঁদের অভিযোগ, শুক্রবার সারা রাত সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না। অন্ধকারের মধ্যেই রাত কাটাতে হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্প চালিয়ে জল তোলা যায়নি দোতলা ও তিনতলায়। ফলে, পানীয় জলের সমস্যা হয়। সবাইকে একতলার একমাত্র শৌচাগারটি ব্যবহার করতে হয়। শনিবার সকালে অনেককে স্নান সারতে হয় পাশের একটি পুকুরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘ভোটের কাজে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হইনি।’’ ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী অবশ্য জানান, সাময়িক সমস্যা হয়েছিল। তা মিটিয়ে ফেলা হয়।