ফাইল চিত্র।
পুরভোটে শাসকদলকে পরাস্ত করতে ‘গণতন্ত্রপ্রেমী ও ধর্মনিরপেক্ষ’ সব শক্তিকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন সিপিএম নেতারা। সে উদ্দেশ্যে শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে বামেদের তরফে প্রার্থীও দেওয়া হয়নি। সেখানে শক্তিশালী কোনও দলের প্রার্থীকে সমর্থন করা হবে, দাবি বাম নেতাদের। কিন্তু মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষের পরে দেখা যাচ্ছে, শহরের নানা ওয়ার্ডে ধাক্কা খাচ্ছে সেই অঙ্ক।
দুর্গাপুরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআই প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ওই আসনে বাম বা কংগ্রেসের কেউ নেই। আবার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের পাশাপাশি আর এক বাম শরিক আরএসপি-ও প্রার্থী দিয়েছে।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি দুর্গাপুরে পুরসভায় নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়ে দেন, বিধানসভা ভোটের মতো কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা পুরভোটে হবে না। তবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব আসনে লড়ব, এমন নয়। তৃণমূল-বিজেপিকে পরাস্ত করতে যদি কোথাও কারও ক্ষমতা বেশি বুঝি, সেখানে আমরা তার পাশেই থাকব।’’ সে দিনই বামফ্রন্টের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে দেয়। আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই বামেরা তালিকা প্রকাশ করেছে অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের সহমত না নিয়েই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করেন সিপিআই নেতারাও।
শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিপিএম ৩১, সিপিআই ৩ এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি একটি করে আসনে মনোনয়ন জমা দেয়। এর মধ্যে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম এবং আরএসপি— দুই বাম শরিকই মনোনয়ন জমা দিয়েছে। কংগ্রেস ১০টি আসনে মনোনয়ন জমা দেয়। তার মধ্যে বামেদের ছেড়ে রাখা ৮টি আসন ছাড়াও ছিল ৩২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দুই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয় কংগ্রেস। আরএসপি সে রাস্তায় হাঁটেনি। তাদের বরাবরের লড়াই করা আসনে জোর করে সিপিএম নিজেদের প্রার্থী চাপিয়ে দিয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। যদিও সিপিএম তা মানেনি।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই প্রার্থী হঠাৎ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে ‘গা ঢাকা’ দেন। ফলে, সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-র সরারসরি লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা যাতে না হয় তাই শেষ পর্যন্ত ওই আসনে এসইউসি প্রার্থী সুচেতা কুণ্ডুকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের জেলা কমিটির সদস্য বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এসইউসি একটি বামপন্থী দল। সুতরাং ওরা আমাদের স্বাভাবিক সঙ্গী।’’ সুচেতাদেবী জানান ইতিমধ্যে তাঁর সঙ্গে সিপিএমের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে।