সুইডেনে রহস্যমৃত্যু দুর্গাপুরের মেয়ে রোশনির। — নিজস্ব চিত্র।
সুইডেনে গবেষণা করতে গিয়ে রহস্যমৃত্যু দুর্গাপুরের রোশনি দাসের। উদ্বিগ্ন পরিবার এখন মৃত্যুরহস্যের কারণ জানতে চাইছে। পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। শুধু দেহ ফিরিয়ে আনাই নয়, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি পরিবারের।
সুইডেনে গবেষণারত এক গবেষকের রহস্যময় মৃত্যু। মৃত গবেষক দুর্গাপুরের ডিপিএল টাউনশিপের ইএন টাইপের বাসিন্দা রোশনি দাস। বছর ৩২-এর রোশনি দুর্গাপুরের স্কুলেরই ছাত্রী ছিলেন। এর পর বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে জ়ুলজি (প্রাণিবিদ্যা) অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকনোলজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা। বর্তমানে সুইডেনের উমেয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরেট করছিলেন রোশনি।
পরিবারের সঙ্গে শেষ বারের মতো রোশনির কথা হয় গত ২৯ সেপ্টেম্বর। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে রোশনির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবারের। কিন্তু তখনও পর্যন্ত এই পরিণতির কথা কিছুই জানতে পারেনি পরিবার। গত ১২ অক্টোবর সুইডেন দূতাবাস থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে। জানানো হয় ঘটনার কথা। তার পর কলকাতার ভবানী ভবন থেকে দুর্গাপুর থানায় যোগাযোগ করা হয়। গত শুক্রবার পরিবারকে দেওয়া হয় রোশনির অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর। জানানো হয়, একটি বন্ধ অ্যাপার্টমেন্টের ভিতর থেকে রোশনির দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেফতারও হয়েছেন সুইডেনের এক নাগরিক। তবে কী কারণে মৃত্যু, তা নিয়ে ধন্দে পরিবার। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া সুইডেন থেকে রোশনির দেহ ফিরেয়ে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। পরিবারের দাবি, রোশনির মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কঠোর শাস্তি হোক।
রোশনির দাদা সুপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘১৩ তারিখে আমরা খবর পাই, একটি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ওঁকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার পর আমরা যোগাযোগ করি স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে। যত দূর খবর পেয়েছি, সুইডেনের এক নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেহটি আপাতত মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। খুনের কারণ নিয়ে আমরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে। দূতাবাসের লোকেরাও কিছুই জানেন না। তাঁরাও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা চাই, ভারত সরকার যেন দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে। আর কোনও মেয়েকে যেন বিদেশে পড়তে গিয়ে এ ভাবে খুন হতে না হয়।’’
স্থানীয় সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘রোশনির দেহ ভারতে নিয়ে আসতে হবে। তদন্ত চলছে বলে এখনই সুইডেন দেহ দেবে না। আমার হাতে এখনও কোনও অফিসিয়াল কাগজ এসে পৌঁছয়নি। আগামী সপ্তাহে আশা করছি, হাতে কাগজপত্র পেয়ে যাব। তার পরেই দুর্গাপুরের বাড়িতে দেহ নিয়ে আসার জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করতে পারব।’’ রোশনির মায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।