‘দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড’। ফাইল চিত্র
কারখানা এই মুহূর্তে উৎপাদনহীন। এলাকাবাসী চান, দ্রুত উৎপাদন চালু হোক কারখানার। কিন্তু বিশাখাপত্তনমে গ্যাস ‘লিক’-এর ঘটনার পরে এলাকাবাসীর দাবি, ‘দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড’ (ডিসিএল) কারখানায় উৎপাদন শুরুর আগে যেন ঠিকমতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে অতীতে এই কারখানা থেকে ঝাঁঝাল গ্যাস বেরিয়ে অসুস্থ হওয়ার উদাহরণও বাসিন্দাদের চর্চায় রয়েছে।
দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৯-এর ৩০ ডিসেম্বর কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কারখানা চালু থাকা অবস্থায় মাঝে-মধ্যেই বিভিন্ন রাসায়নিকের ঝাঁঝাল গন্ধ পাওয়া যেত এলাকায়। একাধিক বার ক্লোরিন গ্যাস ‘লিক’ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সেই সময়ে অনেকে অসুস্থও হয়েছেন।
দুর্গাপুরে বর্তমান রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকে ১৯৬৩-তে ডিসিএল তৈরি হয়। ১৯৬৮-তে শুরু হয় বাণিজ্যিক উৎপাদন। ফেনল, কস্টিক সোডা, ক্লোরিন, বেঞ্জিন-সহ বেশ কিছু রাসায়নিক সামগ্রী ও সেগুলির ‘উপজাত সামগ্রী’ উৎপাদন করা হত কারখানায়। কারখানা লাভজনক করে তুলতে পরে ‘মার্কারি সেল’ প্রযুক্তি বদলে ‘মেমব্রেন সেল’ প্রযুক্তি চালু করা হয়। ফলে, উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৩০ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে হয় ১০০ মেট্রিক টন। কিন্তু কারখানার লোকসান দিন-দিন বাড়তেই থাকে। শেষমেশ, ২০১৬-য় কারখানা বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পর থেকেই উৎপাদনে ভাটা পড়ে।
বিশাখাপত্তনমের ঘটনার পরে এলাকাবাসীর চর্চায় ফের এই কারখানা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কারখানা চালু থাকাকালীন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হত। কিন্ত দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে রক্ষণাবেক্ষণও বন্ধ। ফের কারখানা চালু হলে গ্যাস ‘লিক’ যে হবে না, এটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তাঁদের আশঙ্কা, কারখানায় আচমকা উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জমা গ্যাসও থাকতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই কারখানা থেকে এক বার গ্যাস ‘লিক’ হওয়ায় বহু মানুষকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। আমরা চাই, দ্রুত কারখানায় উৎপাদন চালু হোক। তবে উপযুক্ত সতর্কতা নিয়েই যেন ফের কারখানা চালু করা হয়।’’
মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘ডিসিএল-সহ দুর্গাপুরের সব বন্ধ কারখানায় বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’