সর্বমঙ্গলা মন্দির। ফাইল ছবি।
দেবী সর্বমঙ্গলার ঘট আনার মাধ্যমে শারদোৎসবের সূচনা হল বর্ধমান শহরে। বৃহস্পতিবার ঘট স্থাপনের পর থেকে নবমী পর্যন্ত চলবে পুজো। তবে গত বছরের মতো এ বছরেও মন্দিরে ভিড় করা যাবে না বলে জানিয়েছেন সর্বমঙ্গলা মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ।
রীতি মেনে, বর্ধমান শহরের কৃষ্ণসায়র থেকে রথে চাপিয়ে মায়ের ঘট আনা হয়। মন্দিরের পুরোহিত অরুণ কুমার ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘মহালয়ার পরের দিন দেবী সর্বমঙ্গলার জন্য ঘট আনার নিয়ম। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই হবে পুজো। আজ থেকে নবমী পর্যন্ত পুজো চলবে।’’
সর্বমঙ্গলার ঘট ভরা হচ্ছে কৃষ্ণসায়রে। নিজস্ব চিত্র।
প্রচলিত কাহিনি অনুসারে বর্ধমানের বাহিরসর্বমঙ্গলা অঞ্চলে জেলেদের জালে একটি অদ্ভুত দর্শন পাথর উঠে আসে। কিছুটা শিলার মত দেখতে সেই পাথর। সেই শিলা যে আদতে মূর্তি, তা বুঝতে পারেন স্থানীয় এক পুরোহিত। কাহিনি অনুসারে, জালে ওঠার পর দামোদর লাগোয়া চুন তৈরির কারখানায় শিলামূর্তিটি চলে যায়। সেখানে শামুকের খোলের সঙ্গে পোড়ানো হলেও মূর্তির কোনও ক্ষতি হয়নি। তখন স্বপ্নাদেশ পেয়ে বর্ধমানের তৎকালীন রাজা শিলামূর্তিটিকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন।
ঐতিহাসিকদের মতে, বর্ধমানের মহারাজা শ্রী কীর্তিচাঁদ, ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটি নির্মাণ করান। কিন্তু এই মন্দিরে থাকা সর্বমঙ্গলার মূর্তিটি মন্দিরের থেকেও বেশি প্রাচীন। অনেকের মতে ১০০০ বছর, আবার কারও মতে তা ২০০০ বছরের পুরনো। এই মূর্তিটি হল কষ্টিপাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী মহিষামর্দিনী। দৈর্ঘ্যে বারো ইঞ্চি, প্রস্থে আট ইঞ্চি। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হবার পরে, বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজা উদয় চাঁদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের হাতেই মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে।