জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা। শনিবার বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র।
লোকাল ট্রেন চলছে না। বাসও চলছে কম। এই পরিস্থিতিতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় সব ক’টি কেন্দ্রই ছিল বর্ধমান শহরে। ফলে, জেলার নানা প্রান্ত থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন পরীক্ষার্থীদের অনেকে। কেউ গাড়ি ভাড়া করে, কেউ আবার স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে পৌঁছলেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য-বিধি মেনে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিক সমর দত্ত জানান, বর্ধমান শহরের ছ’টি কেন্দ্রে জেলার মোট ২,৩২৮ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাজ কলেজ, উইমেন্স কলেজ, সিএমএস স্কুল, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল, টাউন স্কুল এবং বিদ্যার্থী ভবন হাইস্কুলে এ দিন সকাল থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় দেখা যায়। কালনা, কাটোয়া, মেমারি, রায়না, খণ্ডঘোষ-সহ নানা এলাকা থেকে এসেছিলেন তাঁরা। সকাল ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও, তার ঘণ্টা দু’য়েক আগে থেকেই পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে হাজির হতে শুরু করেন অনেকে। পরীক্ষার্থীদের অনেকেই জানান, যানবাহনের সমস্যার কথা মাথায় রেখে তাঁরা ভোরেই বেরিয়ে পড়েছিলেন বাড়ি থেকে।
উইমেন্স কলেজের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা মেমারির রসুলপুরের বাসিন্দা মিতা বিশ্বাস জানান, সকাল ৭টার মধ্যে মেমারি স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ৭.৪৫ মিনিট নাগাদ একটি স্টাফ স্পেশাল ট্রেন পান। তাতেই বর্ধমান পৌঁছে টোটো ভাড়া করে কেন্দ্রে এসেছেন। কালনার আটপাড়ার বাসিন্দা আদিরা খাতুনের বাবা শেখ আসফার বলেন, ‘‘ভোরে মেয়েকে মোটরবাইকে নিয়ে বেরিয়েছি। সোজা পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছি। ট্রেন বন্ধ। বাস কম চলছে। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ৫৮ কিলোমিটার বাইকেই এসেছি।’’ কাটোয়া থেকে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলে পরীক্ষা দিতে আসা সায়ন্তন চন্দ্রও জানান, অন্য কোনও কিছুর উপরে ভরসা না থাকায় মোটরবাইকেই এসেছেন।
সিএমএস স্কুলের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা জামালপুরের নবগ্রামের বাসিন্দা শৌভিক ঘোষ জানান, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন ধরে বর্ধমানে পৌঁছেছেন। রায়নার খেমতা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভোরে বাইকে করে গ্রাম থেকে সেহারাবাজার পৌঁছই। সেখান থেকে বাস পেয়েছি। তেলিপুকুরে নেমে ৩০ টাকা টোটো ভাড়া দিয়ে কেন্দ্রে আসতে হল।’’
বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গিয়েছে, দূরত্ব-বিধি মানার জন্য গোল দাগ কাটা হয়েছে গেটের সামনে। পরীক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ও হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে ভিতরে পাঠানো হচ্ছে। পরীক্ষা নির্বিঘ্নে মিটেছে বলে জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।