কাটোয়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর।
মহকুমা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা কারণে মিউটেশনের কাজ বন্ধ রয়েছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রেই খবর, চলতি বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি মিউটেশনের আবেদনপত্র জমা পড়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কাটোয়া ও দাঁইহাট শহর এবং পাঁচটি ব্লকের নানা প্রান্তের বাসিন্দারা ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।
দফতর সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া শহর-সহ কাটোয়া ১-এ ৯,৮১৯টি, দাঁইহাট শহর-সহ কাটোয়া ২ ব্লকে ৮,২৬২টি, কেতুগ্রাম ১ ও কেতুগ্রাম ২-এ যথাক্রমে ৯,২২৮টি, ৫,৭৪৩টি এবং মঙ্গলকোটে ১৭,৫৫১টি জমি, বাড়ির মিউটেশনের আবেদনপত্র জমা পড়ে রয়েছে। এই পাঁচটি ব্লকে দফতরের অফিসে সব মিলিয়ে গোটা মহকুমার ৫০ হাজার ৬০৩টি মিউটেশনের আবেদনপত্র ঝুলে রয়েছে।
কিন্তু কেন এই সমস্যা? দফতর সূত্রে জানা যায়, এই সমস্যার মূল কারণ তিনটি। প্রথমত, আবেদনকারীদের একাংশ অনলাইনের মাধ্যমে মিউটেশনের জন্য আবেদন করছেন ঠিকই। কিন্তু অফিসে এসে ‘হার্ড কপি’ জমা দিচ্ছেন না। এ পর্যন্ত ওই ৫০হাজার ৬০৩টি আবেদনপত্রের মধ্যে ১০ হাজারেরই হার্ডকপি জমা পড়েছে। বাকিগুলির পড়েনি। ফলে, শুনানিতে ডাকতে সমস্যা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, কর্মী সংখ্যা কম হওয়ায় কাজে দেরি হচ্ছে। তৃতীয়ত, রয়েছে লিঙ্ক না থাকার সমস্যাও।
এই সব বিপত্তির কারণে মিউটেশন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ আবেদনকারীদের বড় অংশই। কেতুগ্রামের বাসিন্দা সমীরণ দত্ত বলেন, ‘‘আট মাস আগে প্রয়োজনীয় নথির জন্য আবেদন করেছি। আজ পর্যন্ত শুনানিতে ডাক পাইনি। কবে মিউটেশন হবে, তা জানতে অফিসে গিয়েও লাভ হচ্ছে না।’’ একই অভিযোগ দাঁইহাটের বাসিন্দা প্রবীর মণ্ডল, মিঠু কর্মকারদেরও। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোটের বাসিন্দা মইনুদ্দিন শেখের মতো বেশ কয়েকজনের প্রস্তাব, ‘‘মিউটেশন করানোর জন্য আবেদন করেছি প্রায় এক বছর হয়ে গিয়েছে। তার পরেও মিউটেশন হয়নি। আমার মতো অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন। দফতরের ব্লক, মহকুমা অফিসে গিয়ে কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের উচিত, শিবির করে সমস্যার সমাধান করা।’’ সেই সঙ্গে আবেদনকারীদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, বিভিন্ন অফিসের কর্মীরা কাজে গড়িমসি করাতেই এই হাল।
বিষয়টি নিয়ে কাটোয়া মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বীরেন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘‘নানা কারণে মহকুমায় মিউটেশনের জন্য বিপুল সংখ্যক আবেদনের নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে আমরা বৈঠকও করেছি। আশা করি, খুব দ্রুত সমস্যাগুলি মিটিয়ে কাজ সম্পন্ন করা যাবে।’’ সেই সঙ্গে আবেদনকারীদের কর্মীদের কাজ না করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বীরেন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা ঠিক নয়। অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে কাজ করেন আমাদের কর্মীরা। তাই তো এত সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে।’’