তেল সংগ্রহ করতে ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।
ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিজেল পাইপলাইনে ফাটল। তার জেরে পাইপলাইনের আশপাশের মাঠ ভর্তি হয়ে গেল তেলে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেই তেল সংগ্রহের প্রতিযোগিতা শুরু হল আশপাশের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। মঙ্গলবার এমনই ছবি দেখা গেল পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের কাঁকসায়।
কাঁকসা থানার পানাগড় বাইপাস সংলগ্ন পানাগড় গ্রামের পাঠানপাড়ায় বায়ুসেনা শিবিরের পাঁচিল ঘেঁষে গিয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিজেল পাইপলাইন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে সেই পাইপলাইনে ফাটল ধরে। সেই ফাটল চুঁইয়ে পড়তে থাকে ডিজেল। তা ছড়িয়ে পড়ে পাইপলাইন সংলগ্ন মাঠের কিছু অংশ, নালা এবং পাশের ডোবায়। এক সময় বিপজ্জনক ভাবে বেরোতে থাকে ডিজেল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেখানে জড়ো হন আশপাশের বাসিন্দারা। তাঁরা হাতের সামনে থাকা বালতি, হাঁড়ি-সহ নানা পাত্রে ওই ডিজেল সংগ্রহ করেন। ডিজেল সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
ইন্ডিয়ান অয়েল সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া-রাজবাঁধ ইনপুট লাইনে ফাটল ধরেছিল মঙ্গলবার। ডিজেল দাহ্য পদার্থ। ফলে পরিস্থিতি যে কোনও সময় বিপজ্জনক হতে পারত বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ এবং দমকল। কিন্তু পুলিশের সামনেই চলে ডিজেল সংগ্রহ করতে থাকেন অনেকে। পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। কাঁকসার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুমনকুমার জয়সওয়াল জানিয়েছেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মী, দমকল বাহিনী এবং ইন্ডিয়ান অয়েল আধিকারিকরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। এর পর যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান অয়েলের এক আধিকারিক প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, ১২ হাজার লিটারের মতো ডিজেল নষ্ট হয়েছে। তবে ইন্ডিয়ান অয়েলের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০ হাজার লিটার ডিজেল নষ্ট হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ইন্ডিয়ান অয়েলের আধিকারিকরা। তাঁরা পাইপলাইনের ফাটল মেরামতিতে নামেন। আধ ঘণ্টার চেষ্টায় ফাটল বন্ধ করে দেন তাঁরা। ইন্ডিয়ান অয়েলের রাজবাঁধ টার্মিনালের জেনারেল ম্যানেজার (মেইন্টেনেন্স) জয়দেব মান্না বলেন, ‘‘কী কারণে ফাটল তা তদন্ত করে দেখা হবে। তেল সরবরাহ বন্ধ করে ফাটল মেরামতির পর ওই পাইপলাইন আবার চালু করা হবে।’’ তবে পুরো এলাকা থেকে ডিজেল শোষণ করার পর ফেটে যাওয়া পাইপলাইনের অংশ বদল করতে কয়েক দিন সময় লাগবে বলেই মনে করছেন ইন্ডিয়ান অয়েলের আধিকারিকরা।