সর্বমঙ্গলা মন্দিরে দেওয়া হচ্ছে লাড্ডু ভোগ। —নিজস্ব চিত্র।
তিরুপতি থেকে শুরু করে দেশের বহু মন্দিরেই প্রসাদী লাড্ডু বিক্রির চল রয়েছে। এ বার বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির থেকেও লাড্ডু পাবেন দর্শনার্থীরা। ধনতেরাস থেকে পাওয়া যাবে দেবীর মূর্তি আঁকা রুপোর মুদ্রা।
সোমবার বোর্ডের সম্পাদক শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলাশাসকের অনুপ্রেরণাতেই আমরা প্রসাদী লাড্ডু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশুদ্ধ ঘি ও কাজু দেওয়া বড় লাড্ডু আপাতত আমরা মন্দির থেকেই দর্শনার্থী হাতে তুলে দেব। লাড্ডুর দাম রাখা হয়েছে ৩৫ টাকা।” তাঁরা জানান, এ দিন সন্ধ্যা থেকে লাড্ডু বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা পিছিয়ে গিয়েছে। চাহিদা বাড়লে মন্দিরের ভিতরেই ভিয়েন বসিয়ে লাড্ডু তৈরি করা হবে বলেও জানান তাঁরা।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘দেবী সর্বমঙ্গলার মন্দিরে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা আসেন। তাঁদের কথা ভেবেই ট্রাস্টি বোর্ডের কর্তাদের বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। ধীরে ধীরে প্রস্তাবগুলি কার্যকর হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।’’ কয়েক মাস আগে জেলাশাসকের উদ্যোগেই সর্বমঙ্গলা মন্দির থেকে পশুবলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাস্টি বোর্ড।
জানা গিয়েছে, সপ্তাহ দেড়েক আগে ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দেবীর মূর্তি আঁকা ৫ ও ১০ গ্রামের রুপোর মুদ্রা বিক্রি করা হবে। যাতে ভক্তরা নিজেদের আর্থিক সঙ্গতি অনুযায়ী ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। সোমবার থেকেই ওই মুদ্রা বিক্রি চালু হবে বলেও প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বরাত পাওয়া সংস্থা তা সরবরাহ করতে পারেনি। ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি তথা পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, ‘‘ধনতেরাস থেকে মুদ্রা বিক্রি চালু করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’
বর্ধমানের রাজা বলে পরিচিত কীর্তিচন্দের আমলে দেবী প্রতিষ্ঠিত হন। বর্তমান মন্দিরটি মহাতাব চন্দের আমলে তৈরি। শোনা যায়, মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত অষ্টাদশভুজা দেবীমূর্তির পদতলে কিছু লেখা রয়েছে। সে ভাষা পাঠোদ্ধার করা আজও সম্ভব হয়নি। বছরভরই দু’শো বছর পুরনো ও মন্দিরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভিড় করেন। ট্রাস্টি বোর্ডের দাবি, দূরের ভক্তদের কথা মাথায় রেখে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে অনলাইনে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করারও ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে প্রসাদ ও ফুল পাঠানোর ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্যামলেন্দুবাবু বলেন, “আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা ওই পরিকাঠামো গড়তে পারিনি। আশা করছি, দ্রুত ওই ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে।’’