এই বাসে করেই ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের আনা হয়েছিল। নিজস্ব চিত্র
ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের বাসে করে আনার ব্যবস্থা করেছিল দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানা। কিন্তু কারখানায় কর্মরত বর্তমান শ্রমিকদের একাংশ আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, ‘বাধা’র মুখে শেষমেশ ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে হয়।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে একটি বাসে করে ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা ওই শ্রমিকদের কারখানায় আনা হয়। ‘লকডাউন’ শুরু হওয়ায় ভিন্ রাজ্যের কর্মীরা বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। ‘লকডাউন’ শিথিল হওয়ার পরে, কারখানায় ফের উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে ঠিকমতো উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান হচ্ছে বলে দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের। এই পরিস্থিতিতে কারখানায় আগেও কাজ করেছেন এমন পুরনো এবং নতুন শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ, জানান এলাকার শ্রমিকদের।
সকালে খবর ছড়াতেই কারখানায় কর্মরত এলাকার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখান। সূত্রের খবর, আধিকারিকেরা এলে, তাঁদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীরা কর্তৃপক্ষের কাছে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
কারখানার আইএনটিটিইউসি নেতা শেখ বান্টি বলেন, ‘‘স্থানীয়দের বঞ্চিত করে এ ভাবে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের কাজে লাগানো যাবে না। যদি কোনও ভাবে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের আনাও হয়, তা হলে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে, নির্দিষ্ট সময় ‘কোয়রান্টিন’-এ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে, কারখানায় বর্তমানে কর্মরত এলাকার শ্রমিকদের বিপদ ঘটতে পারে।’’ বিক্ষোভের জেরে শেষমেশ প্রায় তিন ঘণ্টা পরে কর্তৃপক্ষ বাসে করেই ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের কারখানা থেকে বার করার ব্যবস্থা করেন। এর পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শ্রমিকদের নিয়ে সামান্য সমস্যা হয়েছিল। দ্রুত মিটে গিয়েছে।’’ রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা না মেনে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের সোজা কারখানায় নিয়ে গিয়ে কাজ করানোর তোড়জোড়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভিন্ রাজ্য থেকে এলে, আগে নির্দিষ্ট সময় ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের সোজা কারখানায় ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হবে।’’
ডেপুটি লেবার কমিশনার অরুণিমা বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে যিনিই আসুন, সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। কারখানার ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের জন্যও সে কথা প্রযোজ্য।’’