কালনায় বিক্ষোভ যুব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের। শনিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
মহকুমার দুই বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিলেন বিজেপিতে। তবে শনিবার তাঁদের অনুগামী হিসেবে পরিচিত বেশিরভাগ নেতা-কর্মীই দাবি করেন, তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বিজেপিতে যোগদানের প্রতিবাদ জানিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় বিক্ষোভ দেখায় যুব তৃণমূল।
কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দলের যে কার্যালয়ে বিশ্বজিৎবাবু বসতেন, সেখান থেকে শুক্রবার তাঁর জিনিসপত্র একটি ভ্যানে তুলে সরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এত দিন বিধায়কের অনুগামী হিসেবে এলাকায় পরিচিত কিছু তৃণমূল কর্মী কার্যালয়টি সাফ করছেন। সেখান থেকে শুক্রবার মণীষীদের ছবিও খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে তাঁদের। মৌসুমি দে নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে চলি। কার্যালয় বিধায়কের নয়। দলের লোকজন দেখাশোনা করবেন।’’ বিশ্বজিৎ-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শহরের প্রাক্তন কাউন্সিলর আনন্দ দত্তের দাবি, ‘‘তৃণমূল ছাড়া আমাদের অন্য কিছু ভাবনা নেই। বিধায়কের সঙ্গে আমরা নেই।’’ ওই কার্যালয়ে বসে শনিবার সন্ধ্যায় শহরের বিদায়ী কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে সব সম্পর্ক আমরা ছিন্ন করেছি।’’
যুব তৃণমূলের তরফে সন্ধ্যায় কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশ্বজিৎবাবুর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছিলেন সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি সন্দীপ বসু, শহর সভাপতি সৌরভ হালদার। সন্দীপের অভিযোগ, ‘‘পরিবারের ১৩ জনের চাকরির ব্যবস্থা করিয়েছেন উনি। ওঁর মুখোশ খুলে যাবে।’’
বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু ফোনে অবশ্য দাবি করেন, তিনি কার্যালয়ের জিনিসপত্র সরাতে বলেননি। অত্যুৎসাহে কেউ এই কাজ করে থাকতে পারে। তিনি আর ওই কার্যালয় যাবেন না। আপাতত বাড়ি থেকে কাজকর্ম পরিচালনা করবেন বলে জানান।
মন্তেশ্বরের রাউতগ্রামে এ দিন বিধায়ক সৈকত পাঁজার বাড়ির আশপাশের এলাকা ছিল সুনসান। তিনি কুসুমগ্রাম এলাকায় যে কার্যালয়ে বসতেন, সেখানেও নেতা-কর্মীদের দেখা মেলেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জানান, সেটি সৈকতবাবুর নিজস্ব কার্যালয় নয়। আজ, রবিবার থেকে সেটি দলের নেতা-কর্মীরা খুলবেন। এলাকায় বিধায়কের অনুগামী হিসেবে পরিচিত মন্তেশ্বর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সুজিত ভট্টাচার্য, কুসুমগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাগর শেখ, বুথ সভাপতি টোটন শেখদের দাবি, বিধায়কের বিজেপিতে যোগদানকে সমর্থন করছেন না। তাঁরা তৃণমূলের হয়েই কাজ করবেন। দেনুড় অঞ্চল তৃণমূলের চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত চৌধুরী, ধেনুয়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল হকদের আবার দাবি, বিধায়ককে তৃণমূলে হেনস্থা হতে হচ্ছিল। তাঁরা তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন।